যানজট বুঝাচ্ছে, মানুষ অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হচ্ছে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যানজট যেমন সমস্যা, আবার যানজট কিন্তু এটাও বুঝাচ্ছে যে বাংলাদেশের মানুষ অর্থনৈতিকভাবে অনেক উন্নত হচ্ছে।’ তিনি বলেন, পৃথিবীর সব দেশের রাজধানী শহরেই যানজটের সমস্যা রয়েছে। যানজট সমস্যা সমাধান ও সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা, প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।

প্রধানমন্ত্রী বুধবার (১২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সদস্য বেগম নূর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরীর এক প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে এবং সড়ক নিরাপত্তায় উপজেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। চার বছর মেয়াদী ন্যাশনাল রোড সেইফটি অ্যাকশন প্ল্যান প্রণয়ন করা হয়েছে। দেশের ১২১টি দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ৩৭৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ৪ হাজার ৩৬৭ কিলোমিটার ফ্লাইওভার এবং ওভারপাস নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিটনেসবিহীন যানবাহন পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। গত ১৮ আগস্ট পর্যন্ত ট্রাফিক সপ্তাহ চলাকালে সারা দেশে ২ লাখ ৭৭৯টি যানবাহন ও ৮১ হাজার ৪৬৮ জন চালকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, মহাসড়কে বাসের সর্বোচ্চ গতি ৮০ ও ট্রাকের সর্বোচ্চ গতি ৬০ কিলোমিটার এবং অতিরিক্ত ওজন সীমার যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে অ্যালেক্স রোড কন্ট্রোল স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে এবং মহাসড়কের পাশে বিশ্রামাগার স্থাপন করা হবে।

যানজট নিরসনে ঢাকার চারদিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘মানে ঢাকাটা ঘিরেই একটা রিংরোড। কিন্তু, সেটা ঠিক ফ্লাইওভারের মতোই এলিভেটেড করে দেব।’

এ ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনা রোধে শুধু চালকদের শাস্তি নিশ্চিত করলেই হবে না, যত্রতত্র যারা রাস্তা পারাপার হয় তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এত বড় একটা দুর্ঘটনা ঘটল। এ রকম আন্দোলন হলো। তারপরও আমরা দেখি যে মানুষের মাঝে সেই সচেতনতা নাই। তারা যত্রতত্র রাস্তা পার হচ্ছে। ড্রাইভারের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। যত্রতত্র রাস্তা পারাপার হলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে এটা থামবে। তা ছাড়া থামবে না।’

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে এমন প্রশ্ন করেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য বেগম নূর-ই হাসনা লিলি চৌধুরী।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, সড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বন্ধ করা, বাস স্টপেজের আধুনিকায়ন, ওভারপাস ও আন্ডারপাস নির্মাণসহ নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।