কুরআন হাতে শপথ নিলেন মার্কিন মুসলিম এমপিরা

মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত দুই মুসলিম নারী কুরআন মজিদে হাত রেখে শপথ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার ইতিহাস গড়ে তারা এ শপথ নেন। তবে কুরআন ব্যবহার করে শপথ নেয়ার ঘটনা এবারই প্রথম নয়। ২০০৭ সালে কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী কেইথ এলিসনও জেফারসনের ওই কুরআন শরীফ হাতে নিয়ে শপথ নিয়েছিলেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ১১৬তম কংগ্রেসে এসে প্রথমবারের মতো মুসলিম সম্প্রদায় থেকে দু’জন নারী
নির্বাচিত হন। তারা হলেন- ফিলিস্তিন বংশোদ্ভূত রাশিদা তালিব ও সোমালি বংশোদ্ভূত ইলহান ওমর। ৪৩৫
আসনের মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে মুসলিম সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তারাই প্রথম প্রতিনিধি।

পাবলিক রেডিও ইন্টারন্যাশনাল (পিআরআই) এবং অন্য গণমাধ্যমগুলো জানায়, ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী
পোশাক পরিহিত রাশিদা তালিব তার শপথ নেয়ার জন্য ১৭৩৪ সালে প্রকাশিত পবিত্র কুরআনের ইংরেজি অনুবাদ গ্রন্থটি ব্যবহার করেন, যা যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের লেখক ও দেশটির তৃতীয় প্রেসিডেন্ট থমাস জেফারসনের সাথে সম্পর্কিত ছিল।

কুরআনের অনুবাদ গ্রন্থে হাত রেখে শপথ নেয়ার কারণ হিসেবে ৪২ বছর বয়সী রাশিদা তালিব বলেন, এটা আমার কাছে ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ অনেক আমেরিকানই মনে করে ইসলাম যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের বাইরের
কিছু। কিন্তু (বাস্তবে তা নয়) এখানে মুসলমানরা শুরু থেকেই ছিল। আজকের কংগ্রেস সদস্যরা ইসলাম সম্পর্কে যা জানে, আমাদের প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট জেফারসন তার চেয়েও বেশি জানতেন। মিশিগানের ডেট্রয়েটের
বাসিন্দা রাশিদা তালিবের পরিবার ইসরাইল অধিকৃত ফিলিস্তিনের ছোট একটি গ্রাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি
জমিয়েছিল।

এ দিকে ৩৭ বছর বয়সী ওমর ইলহান কংগ্রেসের প্রথম সদস্য হিসেবে হিজাব পরেই শপথ নিয়েছেন। এ পর্যন্ত এ হাউজে কোনো ধরনের হ্যাট বা হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল ছিল। ওমর তার দাদার একটি কুরআনের ওপর হাত রেখে শপথ নেন। এ দাদাই তাকে আজকের অবস্থানে পৌঁছুতে সাহায্য করেছেন। ওমরের বাবা নুর মোহাম্মদ মেয়ের ইনস্টাগ্রামে লিখেছেন, সোমালিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসার ২৩ বছর পর ইলহান ওমর কংগ্রেসে প্রবেশ করেছে।

বামপন্থী পিআরআই কুরআনে হাত রেখে এই দুই ডেমোক্র্যাটিক সদস্যের শপথ নেয়ার বিষয়ে মন্তব্য করেছে, এটি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সার্বিক যুদ্ধের তিনটি বিষয়কে স্পর্শ করেছে। এগুলো হলো- অভিবাসী, মুসলিম ও নারী।