টানা দুই ম্যাচে জয়ের পর অঙ্কের হিসাবে এখনো নিশ্চিত নয় বাংলাদেশের সেমিফাইনাল। আজ শনিবার ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। যে ম্যাচে ড্র করলেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিতে উঠে যাবে লাল-সবুজের দেশ। হারলেই কেবল জটিল সমীকরণে পড়তে হবে। কিন্তু বাংলাদেশ জয় তুলে নিয়েই সেমিফাইনালে খেলতে চায়। বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক স্ট্রাইকার জাহিদ হাসান এমিলি নেপাল ম্যাচটিকে দেখছেন টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হিসেবে।
গণমাধ্যমকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, এ ম্যাচেই বোঝা যাবে কত দূর যাবে বাংলাদেশ। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে বড় স্বপ্নই দেখেছিল বাংলাদেশের সাধারণ দর্শকরা। এশিয়ান গেমসে দলের পারফরম্যান্স প্রত্যাশার পারদকে উপরে তুলে দেয়। তবে টানা তিন সাফে গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ।
ফুটবল বোদ্ধারা তাই বলছিলেন, গ্রুপের বাধা পেরুতে পারলেই সেটি হবে বাংলাদেশের জন্য সেরা অর্জন। টানা দুই জয়ে অবশ্য প্রেক্ষাপট বদলেছে। সেমিতে উঠতে খানিক যে সংশয়, তা নিয়ে না ভেবে ফাইনাল পর্যন্ত স্বপ্ন দেখছেন অনেকে। ভুটানের বিপক্ষে ২-০ এবং পাকিস্তানের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয়ের পর সেটি অবশ্য অবাস্তবও কিছু নয়। কিন্তু জয়ের পরও তো কিছু কথা থাকে।
প্রথম দুই ম্যাচে কেমন খেলল বাংলাদেশ? দেশের হয়ে ৫টি সাফের আসরে খেলা এমিলি বললেন, ‘বাংলাদেশ প্রথম দুটি ম্যাচ ভালো খেলেছে। তবে এর বাইরেও যদি বলতে বলেন তবে আমি বলব, অনেক ভুল-ত্রুটি ছিল। তবে জয় দরকার ছিল। বাংলাদেশ দুটি ম্যাচই জিতেছে এটাই হচ্ছে সবচেয়ে পজিটিভ দিক।’
ভুলগুলোর কথা জিজ্ঞেস করলে এমিলি বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশ যে খুব ভালো ফুটবল খেলেছে তা বলা যাবে না। একটা সময় মনে হচ্ছিল, লম্বা পাসে খেলছে। এই পাকিস্তান বা অন্যান্য দলের সঙ্গে এতো লম্বা পাস খেলে আপনি জিততে পারবেন না। বাংলাদেশ যখন বল গ্রাউন্ডে রেখে খেলেছে তখন অনেক ভালো করছিল।’
এমিলি তাই মনে করেন, খেলার ধরন বদলাতে হবে বাংলাদেশকে। বলেন, ‘আমার মনে হয়, খেলার ধরনে পরিবর্তন আনতে হবে এবং কোন দলের সঙ্গে কীভাবে খেলবে এটা ম্যাচ বাই ম্যাচ প্ল্যানিং করে খেলা উচিত। কারণ পাকিস্তানের সঙ্গে আরো গোছানো ফুটবল আশা করেছিলাম আমি ব্যক্তিগতভাবে।’
তারপরও জয়ই যে শেষ কথা সেটিও বলতে ভুলছেন না এক সময়ের দেশ সেরা স্ট্রাইকার। বললেন, ‘দুটি ম্যাচই ব্যাক টু ব্যাক জিতেছে বাংলাদেশ। যখন একটা টিম চ্যাম্পিয়ন হতে যাবে তখন ধারাবাহিক জয়টা সবচেয়ে বেশি দরকার হয়। কতোটা ভালো খেলা বা ভুল সেটা দেখার বিষয় নয়। জিতেছে এটাই তখন মুখ্য।’
বাংলাদেশকে তাই টুর্নামেন্টে এই মুহূর্তে এগিয়েই রাখছেন এমিলি। বললেন, ‘টানা দুই ম্যাচ জেতায় আমি মনে করি বাংলাদেশ উজ্জীবিত আছে এবং পরের ম্যাচগুলোতে তা কাজে লাগবে। আমি বলব, ওভার অল বাংলাদেশ এখন ভালো অবস্থানে আছে।’
কিন্তু বাংলাদেশ কত দূর যাবে? এই প্রশ্নে নেপাল ম্যাচটাকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলছেন ২০১৫ সালে কেরালা সাফে সর্বশেষ খেলা এই স্ট্রাইকার। বলেন, ‘নেপালের সঙ্গে ম্যাচ দেখার পর বলা যাবে বাংলাদেশ কতটা ফেভারিট। এখন পর্যন্ত যে দলগুলোর খেলা দেখেছি তাতে নেপাল এবং ভারতের খেলা সবচেয়ে বেশি ভালো লেগেছে। এই দলগুলোর সঙ্গে খেলার পর বোঝা যাবে বাংলাদেশ কতটা ফেভারিট। এ কারণেই বলছি, নেপাল ম্যাচটা আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ সেমি ফাইনাল খেলবে। তবে নেপাল ম্যাচই আসলে বোঝা যাবে, বাংলাদেশ এই টুর্নামেন্টে কত দূর যেতে পারবে।’
বাংলাদেশ সেমি ফাইনাল খেলবে বলে আশার কথা বললেন এমিলি। আর সেটি পারলে বাংলাদেশকে ফাইনালেই দেখেন তিনি।