রামপ্রসাদ সরকার দীপু : শত বছরের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক- বাহক জেলার বৃহত্তম হাট ঘিওর। উপজেলার ধলেশ্বরী – ইছামতি নদীর কোল ঘেসে ঢাকা বিভাগীয় অঞ্চলের মধ্যে সব চেয়ে বড় প্রসিদ্ধ হাট ও বাজার ঘিওর। প্রতি বুধবার সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হাটে কেনা বেচা হয়। তবে বর্তমানে যত্রতত্র নোংরা পরিবেশ, নদী ভাঙ্গন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা অপ্রতুল, খাসজমি দখলসহ নানা কারনে ঐতিহ্য সুনাম এখন আর নেই বললেই চলে। খাসজমি গুলি স্থানীয় প্রভাবশালীদের দখলের কারনে হুমকির মুখে পড়েছে হাটবাজারটি। হাটের জমিতে অবৈধ ভাবে টিনশেড- ছাপড়া ঘড় থেকে শরু করে পাকা স্থাপনা এমনকি বহুতলা ভবনও তৈরী করা হচ্ছে। ইচ্ছামত খাসজমি দখলদারদের কারনে ৭টি ইউনিয়নের ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন পন্যে বিক্রি করতে পারছেনা। গাদাগাদি করে ব্যবসায়ীরা রাস্তার উপরে বসে কেনাবেচা করছে। জায়গা না পেয়ে অনেকেই রাস্তার উপরে পন্যের পসরা নিয়ে বসে পরে। অথচ স্থানীয় প্রশাসন রহস্যজনক কারনে এ ব্যাপারে নীরব ভুমিকা পালন করছে।
সরেজমিন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, হাটের খাসজমি দখল করে বিভিন্ন রনের বহু দোকান পাট গড়ে তোলা হয়েছে। হাটের বিভিন্ন রাস্তা ঘেঁসে এসব দোকান নির্মিত হয়েছে। এতে করে বাজারের সাধারন ব্যবসায়ীদের মালামাল নিতে চরম অসুবিধা হচ্ছে। ওয়ান ইলেভেনের সময় ঘিওর ধানহাট, মুড়িহাট, পুরাতন কাপড়পট্রি ও গরু হাটার বিভিন্ন স্থানে চান্দিনা ভিটা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তাদের অনেকে হাট বাজারে ব্যবসার সাথে জড়িত না । জমি বরাদ্দ নিয়ে পাঁকা ঘড় তুলে ভাড়া দিচ্ছে প্রভাবশালী চক্রটি। ঘিওর গরু হাটায় বিভিন্ন স্থানে রাতারাতি ছাপরা ঘড় তুলে দখল করা হচ্ছে। ভূমি অফিসের এক শ্রেনীর দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সহযোগিতায় বাসষ্ট্যান্ড ও গরুহাট এলাকায় রাতারাতি গড়ে উঠছে বিভিন্ন দোকানপাট। ফলে শতশত লোকজনের যাতায়াতের মারাত্মক অসুবিধা হচ্ছে।
বাজারের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, খাসজমি দখল হওয়ায তারা কাঙ্খিত পণ্য তারা হাটে তুলতে পারছেনা। বড় পাইকারদের সংখ্যা ইতোমধ্যে কমে গেছে। কম পুঁজির ব্যবসায়ীরা কোনো রকমে টিকে আছে। দখলদারদের কারনে হাট ও বাজারের অস্তিত¦ ও সুনাম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ৮০/৯০ দশকের দিকে হাটে গরু, ধান ও পাট বিক্রির জন্য বিখ্যাত ছিল । কিন্তু সেই জৌলস এখনআর নেই।
বাজার কমিটির সাধারন সম্পাদক আঃ মতিন মুসা জানান, নদী ভাঙ্গন, খাসজমি দখল সহ বিভিন্ন কারনে হাটের পরিধিকমে গেছে। তবে অচিরেই প্রশাসনকে বিষয়গুলো জানানো হবে।
ঘিওর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান, হাটবাজার দখলের বিষয়টি শুনেছি। আমার উপরোক্ত কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা খন্দকার জানান, হাট বাজারের জমি দখলের ক্ষমতা কারো নেই। অবৈধ ভাবে হাটে খাস জমি কেউ দখল করে থাকলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।
সব খবর/ মানিকগঞ্জ/ ৭ জুলাই ২০১৮/ লিটন