স্টাফ রিপোর্টার : পাটুরিয়া ফেরি ঘাটের কোন তথ্যই সাংবাদিকদের দিচ্ছেন না ঘাট কর্তৃপক্ষ। বিআইডব্লিউটিসির পাটুরিয়া ঘাটের ডিজিএম আজমল হোসেনের নির্দেশে কর্মকর্তারা ঘাটের তথ্য প্রদান থেকে বিরত রয়েছেন।
এদিকে, কর্তৃপক্ষের সুনির্দিষ্ট তথ্য ও বক্তব্য না পাওয়ায় বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে বিভ্রান্তিতে পড়ছেন। সেই সাথে তথ্য না দেওয়ায় সাংবাদিকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাটুরিয়া ফেরি ঘাটের ডিজিএম আজমল হোসেন মানিকগঞ্জে যোগদানের পর থেকেই নিয়মিত অফিস করেননা। একগুয়েমি স্বভাবের কারণে নিজ অধস্তন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে তার অনেকটাই দুরত্ব রয়েছে। মানিকগঞ্জে যোগদানের পর থেকেই তিনি মিডিয়াতে কথা বলতে চান না।
ঢাকার সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের অন্যতম নৌরুট হিসেবে পরিচিত পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট। নাব্যতা সংকট, ফেরি স্বল্পতা আর ঘনকুয়াশায় বছরের বেশিরভাগ সময় রুটটিতে যাত্রী দুর্ভোগ লেগেই থাকে। এই রুট দিয়ে পাড় হওয়া যাত্রী ও যানবাহন চালকরা ঘাটের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে নির্ভর করে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার খবরের ওপর। ফেরি ঘাটে দায়িত্বরত বিভিন্ন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের এই তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতেন। তবে, গত দুই দিন ধরে ফেরি ঘাটের কোন তথ্য সাংবাদিকদের দেয়া হচ্ছেনা।
একাত্তর টিভির মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম মিহির বলেন, ঈদসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটের খবর আমরা প্রচার করে থাকি। এই ঘাট দিয়ে পারাপারকারী লাখ লাখ মানুষ ঘাটের সার্বিক পরিস্থিতি জানতে আমাদের খবরের ওপর চোখ রাখেন। তবে, ডিজিএম তার অধস্তন কর্মকর্তাদের সাংবাদিকদের তথ্য দিতে নিষেধ করায় আমরা ঘাটের তথ্য পাচ্ছিনা।
তিনি আরো বলেন, যারা এতদিন নিয়মিত তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতেন, গত তিনদিন ধরে তারা আমাদের কোন তথ্যই দিচ্ছেননা। ফোন দিলে তারা ডিজিএমের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। তবে, গত তিনদিন ধরে ডিজিএমকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরছেন না।
চ্যানেল টুয়োন্টিফোরের প্রতিনিধি ইউসুফ আলী শেখ বলেন, আমি গত দুই দিন ডিজিএমকে অনেকবার ফোন দিয়েছি তিনি ফোন রিসিভ করেননা। এর আগেও টেলিভিশনের বিভিন্ন প্রতিবেদনের জন্য তার বক্তব্য প্রয়োজন হলে তিনি বক্তব্য দেননি।
মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু বলেন, পাটুরিয়া ফেরি ঘাট দেশের অন্যতম একটি নৌপথ। প্রতি ঈদে এই পথ দিয়ে লাখ লাখ মানুষ যাতায়াত করেন। তবে, ফেরি ঘাটের ডিজিএম কর্মস্থলে ঠিকমত থাকেনা। কোন তথ্যের প্রয়োজন হলে তাকে কখনও তার অফিসে পাওয়া যায়না। ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন। এ বিষয় নিয়ে ইতিপূর্বে জেলা আইনশৃঙ্খলা সভাতেও একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। সাংবাদিকদের তথ্য না দেওয়ার পেছনে ওই কর্মকর্তার কোন দুরভিসন্ধী থাকতে পারে। বিগত সময়েও যারা ডিজিএমের দায়িত্ব পালন করেছেন তারা সাংবাদিকদের আন্তরিকতার সাথে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতেন।
সব খবরের পক্ষ থেকে ঘাটের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানতে ডিজিএম আজমল হোসেনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
তবে, পাটুরিয়া ফেরি ঘাটের এজিএম জিল্লুর রহমান জানিয়েছেন, ফেরি ঘাটের সকল তথ্য নিতে ডিজিএমের সাথেই যোগাযোগ করতে হবে। আমরা কোন তথ্য দিতে পারবনা।
এব্যাপারে বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান মফিজুল হক বলেন সব খবরকে, তথ্য দেওয়ার জন্য মুখপাত্র হিসেবে আমাদের ডিজিএম রয়েছেন। তাকে সব তথ্য দেওয়ার ব্যাপারে বলা হয়েছে। তবে, তিনি সাংবাদিকদের ফোন ধরেননা এবং সরাসরিও কোন কথা বলতে চান না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনি তার কাছে যান তাকে বলা আছে, সে তথ্য দেবে।
সব খবর/ মানিকগঞ্জ/ ১৪ জুন ২০১৮/ লিটন