বিশেষ প্রতিবেদক : মানিকগঞ্জের নয়াডিঙ্গীতে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের অধিগ্রহণকৃত এক কিলোমিটার জায়গায় অবৈধভাবে ড্রেন নির্মাণ করেছে তারাসিমা নামের একটি পোশাষ কারখানা। এঘটনায় গত ৩ মে সাটুরিয়া থানায় একটি জিডি করেছে সওজ কর্তৃপক্ষ। অবৈধভাবে এই ড্রেন নির্মাণ করায় সরকার প্রায় কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে বলে জানিয়েছে সওজ বিভাগ।
সরেজমিনে ওই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক প্রশস্ত করনের ফলে নয়াডিঙ্গীতে তারাসিমা গার্মেন্টসের পুরনো ড্রেন অকেজ হয়ে পড়েছে। এ কারনে তারাসিমা গার্মেন্টস মালিকপক্ষ পুনরায় নতুন করে ফ্যাক্টরীর বর্জ্য ধলেশ্বরী গাজীখালি নদীতে ফেলার জন্য ড্রেন নির্মান করছে। এতে নদীর পানি যেমন দূষিত হচ্ছে তেমনি মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে পরিবেশের। ওই কারাখানা একমাস ধরে সরকারী জমির ওপর দিয়ে অবৈধভাবে ড্রেন নির্মান করছে। ড্রেন নির্মান কাজও প্রায় শেষের দিকে। দীর্ঘ দিন ধরে ড্রেন নির্মান করা হলেও স্থানীয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
সওজ নয়ারহাট সড়ক উপ বিভাগের শাখা-২ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামাল উদ্দিন আহম্মেদ জানান, ড্রেন নির্মান কাজ বন্ধের জন্য প্রথমে মৌখিক ও পরবর্তীতে দুই বার লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও তারা কাজ বন্ধ করেনি। যে কারণে সাটুরিয়া থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করা হয়েছে।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়েছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ৪৪ কিমি সড়কে আরিচা অভিমুখী সওজের জায়গায় বাম পাশে অবস্থিত তারাসিমা এ্যাপারেলস সওজ জায়গা দখল করে ওয়াশিং মেশিনের বিষাক্ত বর্জ্য পানি বের করার ড্রেন নির্মান করছে। বিগত সময় দুই বার লিখিতভাবে তারাসিমাকে নিষেধ করা সত্বেও তারা জোরপূর্বক ড্রেন নির্মানের কাজ করেছে। তারা সরকারী সম্পতি ক্ষতি সাধন ও দখলের পায়তারা করছে।
এদিকে, গাজীখালি নদীর পাড়ের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এক সময় এই নদীর পানি তারা গৃহস্থলি নানা কাজে ব্যবহার করতো। কিন্তু পোষাক কারখানার বর্জ্যে ফেলায় তারা এখন আর নদীর পানি আর ব্যবহার করতে পারছেননা। এছাড়া দুর্গন্ধে এখানে বসবাস করাও কঠিন হয়ে পড়েছে।
তারাসিমা এ্যাপারেলস এর ম্যানেজার প্রসাশন (ভূমি) মোকসেদ আলী সাংবাদিকদের জানান, সওজ এর কাছ থেকে লীজ নিয়ে তারা ড্রেন নির্মান করছেন। ২০১৫ এর নীতিমালা অনুযায়ী লীজ নেয়া হয়েছে কিনা প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ২০১৫ এর নীতিমালাটি তার জানা নেই।
মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মহিবুল হক জানান, বিষয়টি জানার পর সওজ নয়ারহাট সড়ক উপ বিভাগের শাখা-২ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী কামাল উদ্দিন আহম্মেদকে তারাসিমা কর্তপক্ষের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থার নেওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সাটুরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি ) আমিনুর রহমান জানান, সওজ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পোষাক কারখানার কর্তৃপক্ষকে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ড্রেন নির্মানের জন্য বলা হয়েছে।
সব খবর/ মানিকগঞ্জ/ ১৬ মে ২০১৮/ লিটন