যবিপ্রবি’র ২০ বিভাগের চেয়ারম্যানের একযোগে পদত্যাগ

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ২০টি বিভাগের চেয়ারম্যান একযোগে পদত্যাগ করেছেন। শিক্ষক সমিতির সভাপতিকে প্রাণনাশের হুমকি ও শিক্ষক-কর্মকর্তাদের মানববন্ধনে হামলায় জড়িতদের শাস্তি না হওয়ায় শনিবার উপাচার্য বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন তারা।

পদত্যাগকারী বিভাগীয় চেয়ারম্যানরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদ, ব্যবস্থাপনা বিভাগের ড. নাজমুল হাসান, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রকৌশলী ড. আমজাদ হোসেন, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের ড. সাইবুর রহমান মোল্লা, রসায়ন বিভাগের ড. সুমন চন্দ্র মোহন্ত, মার্কেটিং বিভাগের ড. মো. মেহেদী হাসান, ইংরেজি বিভাগের ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, হিসাববিজ্ঞান বিভাগের মোহাম্মদ কামাল হোসেন, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. ওয়াসিকুর রহমান, ফিশারিজ অ্যান্ড মেরিন বায়োসায়েন্স বিভাগের ড. আনিসুর রহমান, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. এ এস এম মুজাহিদুল হক, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. বিপ্লব কুমার বিশ্বাস, অ্যাগ্রো প্রোডাক্ট প্রসেসিং টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাস, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. সৈয়দ মো. গালিব, গণিত বিভাগের সাইফুল ইসলাম, শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়াবিজ্ঞান বিভাগের ড. জাফিউল ইসলাম, টেপটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ড. তানভীর হাসান, পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের ড. ওমর ফারুক, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শেখ মিজানুর রহমান।

পদত্যাগপত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ৮ ও ৯ জানুয়ারি র‌্যাগিংয়ে মদদদাতা কিছু উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাগিংবিরোধী ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এর প্রতিবাদ জানানোয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. ইকবাল কবীর জাহিদকে ফোনে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে গত ১২ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কিন্তু সেখানেও হামলা চালায় ওই শিক্ষার্থীরা। এসব ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষক সমিতি কর্মসূচি ঘোষণা করে। কিন্তু উপাচার্য ও যশোরের সুশীল সমাজ ন্যায়বিচারের আশ্বাস দেওয়ায় কর্মসূচি স্থগিত রাখা হয়। শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরবর্তী রিজেন্ট বোর্ডের সভা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।

শিক্ষকরা জানান, সর্বশেষ গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম রিজেন্ট বোর্ডের সভায় শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে ন্যায়বিচার ভূলুন্ঠিত হয়েছে। লাঞ্ছনাকারীরা নিরাপত্তা ও উৎসাহ পেয়েছে। বিচারহীনতার মাধ্যমে শিক্ষকদের হুমকির মধ্যে ফেলা হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে একযোগে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ বিভাগের চেয়ারম্যানরা।

যবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. নাজমুল হাসান বলেন, সমিতির সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিভাগীয় চেয়ারম্যানের পদ থেকে গণপদত্যাগ করা হয়। শনিবার উপাচার্যের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিতে গেলে তিনি গ্রহণ করেননি। তবে তার চিঠি গ্রহণ শাখায় ওই পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রত্যেক বিভাগের চেয়ারম্যানের আলাদা কাগজে পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার নিয়ম। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অফিসে ছিলাম। আমার কাছে কোনো পদত্যাগপত্র আসেনি।