প্রায় সব নদীর পানি বাড়ছে, বন্যা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা

ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা ছাড়া দেশের সব নদ-নদীর পানি বাড়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা করছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। ভারী বর্ষণ ও উজানের পানির ঢলে ইতোমধ্যে ছয়টি পয়েন্টে নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান বুধবার বলেন, গঙ্গা-পদ্মার পানি বৃদ্ধির প্রবণতা আগামী ৪৮ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে।

“এর ফলে গঙ্গা-পদ্মা ও গড়াই নদী সংলগ্ন পাবনা, কুষ্টিয়া, মাগুরা, রাজবাড়ী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।”

ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও সুরমা-কুশিয়ারার পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টা কমতে পারে বলে আরিফুজ্জামান জানান। পানি উন্নয়ন বোর্ড যে ৯৩টি পয়েন্টে নদ-নদীর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে, তার মধ্যে ৫৬টি পয়েন্টে পানি বাড়ছে, কমছে ৩৭টি পয়েন্টে। আর ৬টি পয়েন্টে নদী বইছে বিপদসীমার উপর দিয়ে।

বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চেরাপুঞ্জিতে ৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর দেশের ভেতরে সুনামগঞ্জে ২৪৫ মিলিমিটার, জাফলংয়ে ১৩৭ মিলিমিটার, কানাইঘাটে ১১৩ মিলিমিটার, ঢাকায় ৭৫ মিলিমিটার, ছাতকে ১৯৯ মিলিমিটার, পাবনায় ৮১ মিলিমিটার ও বরিশাল পয়েন্টে ৭৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সেপ্টেম্বরের শেষে ভারতের বিহার ও পশ্চিবঙ্গের অনেক জায়গায় মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণের প্রভাবে দেশে নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করে। এর মধ্যে বন্যার কারণে ফারাক্কা বাঁধের ১১৯টি গেইটের সবগুলোই সোমবার খুলে দেয় ভারত।

এর মধ্যে উজান থেকে নেমে আসা ঢলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, পাবনা, কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও মাগুরা জেলার কিছু স্থানে স্বল্প থেকে মধ্য মেয়াদী বন্যা দেখা দেয়।

প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান বলেন, উজানে বৃষ্টিপাত কমে এলে চলতি সপ্তাহের শেষার্ধ থেকে গঙ্গা নদীর পানি কমতে পারে, তখন বন্যা পরিস্থিতিরও উন্নতি হবে।

অক্টোবর মাসের দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ জানান, চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুটি নিম্নচাপের সৃষ্টি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে। অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু (বর্ষা) বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেবে।