ঢাবিতে আন্দোলনের মুখে পদত্যাগে বাধ্য হলেন ড. মিজানুর রহমান

মসজিদে নামাজ পড়তে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্ট এবং মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের ছেলে হলের আবাসিক এক শিক্ষার্থীকে ‘দুই টাকার ছাত্র’ বলায় বিক্ষোভ করেছে হলের শিক্ষার্থীরা। পরে প্রাধ্যক্ষের পক্ষপাতমূলক বক্তব্যের কারণে শিক্ষার্থীরা প্রাধ্যক্ষকে প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে।

এ সময় তারা প্রাধ্যক্ষ ড. মিজানুর রহমানের পদত্যাগ দাবি করেন। পরে উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে পদত্যাগের ঘোষণা দেন হল প্রাধ্যক্ষ মিজানুর রহমান। শুক্রবার ফজলুল হক মুসলিম হলে পবিত্র জুমার নামাজের পরে এসব ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার হল মসজিদে নামাজ আদায় করছিলেন মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের ছাত্র রাইহান। এসময় উদাসীনভাবে যাওয়া প্রাধ্যক্ষপুত্রের পা রাইহানের মাথায় লাগে। এরপর রাইহান তাকে কোন বিভাগে পড়েন জানতে চাইলে ক্ষেপে গিয়ে প্রাধ্যক্ষপুত্র তাকে ‘দুই টাকার ছাত্র’ বলে হেয় করে।

এ সময় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রভোস্ট মিজানুর রহমানও এসে জানতে চান কোন শিক্ষার্থী তার ছেলের সাথে ‘মিসবিহেইভ (দুর্ব্যবহার)’ করেছে? তাকে নিয়ে আসার কথা বলেন। সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীরা পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ এনে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ চেয়ে স্লোগান দিতে থাকেন এবং তাকে কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন। এসময় প্রায় দুই ঘণ্টা শিক্ষার্থীদের দ্বারা অবরুদ্ধ ছিলেন তিনি।

এদিকে অবরুদ্ধ অবস্থায় ঘটনাস্থলে যান ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। পরে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মিজানুর রহমান ছাত্রদের কাছে ক্ষমা চান এবং পদত্যাগ পত্র লিখে হাতে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের সাহায্যে হল ত্যাগ করেন।

এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার সিদ্দিক শিশিম বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা প্রভোস্টের ছেলে ও স্যারের ক্ষমা চাওয়ার কথা বলেছে। স্যার ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামান বলেন, একটি অপ্রীতিকর ঘটনার কথা শুনেছি। তবে পদত্যাগপত্র এখনো হাতে পাননি বলে জানান ভিসি।

এ বিষয়ে জানতে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানকে ফোন দিলে তার মেয়ে পরিচয়ে একজন ফোন ধরেন। তিনি বলেন,‘বাবা এইমাত্র বাসায় ফিরেছেন। সারাদিন তিনি খাওয়া-দাওয়া করেননি। পরে তিনি অবশ্যই কথা বলবেন।’