জিন তাড়াতে প্রিয়াংকাকে মোমের ছ্যাঁকা

ফেনীতে শিশু প্রিয়াংকাকে নির্যাতনের ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ফেনীর পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার।

পুলিশ সুপার জানান, ২০১১ সালে সিলেটের জনৈক সুফিয়া বেগমের কাছ থেকে প্রিয়াংকাকে এক বছর বয়সে কোর্টের মাধ্যমে দত্তক নেন শাহেনা আক্তার। তিনি তার আরও এক দত্তক মেয়ে প্রিয়সীকে নিয়ে রাজধানীর খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। গত ১৫ দিন আগে শাহেনা বেগম মেয়ে প্রিয়াংকাকে নিয়ে ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়নের গজারিয়া কান্দি গ্রামের বাবারবাড়িতে বেড়াতে আসেন। সেখানে প্রিয়াংকা অদ্ভুত আচরণ করলে শাহেনা স্থানীয় ভণ্ড বৈদ্য লন্ড্রি দোকানদার অমৃত কুমার ও কবিরাজ মো. আবদুল্লাহকে নিয়ে আসেন।

তিনি বলেন, শাহেনার ভাষ্যমতে- অমৃত কুমার ও মো. আবদুল্লাহ বলেন, প্রিয়াংকার ওপর জিন ভর করেছে আর এ জন্য শাহেনাও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ওই জিন তাড়ালে শাহেনা ও প্রিয়াংকা উভয়ই সুস্থ হয়ে উঠবে। পরে তারা প্রিয়াংকার শরীরে ঝাঁড়-ফুঁক ও মোমের ছ্যাঁকা দেয়। এতে প্রিয়াংকা অসুস্থ্য হয়ে পড়লে শাহেনার আত্মীয় জোহরা বেগম তাকে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে আধুনিক ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।

পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনায় শাহেনা আক্তার (৪১), দুই ভণ্ড ওঝা অমৃত দাস (৬০) ও মো. আবদুল্লাহ (৫০) এবং শাহেনার সহযোগী মুন্নি আক্তার প্রেমাকে (২২) আটক করা হয়েছে। তারা শিশুটিকে বিগত প্রায় ৮ মাস ধরে নির্যাতন করে আসছে।

পুলিশ সুপার এসএম জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, শাহেনা আক্তার মানসিকভাবে অসুস্থ। তিনি ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ‘দুই দিনের দুনিয়া’, ‘বিষাক্ত ছোবল’সহ বেশ কয়েকটি ছবিতে পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শাহেনা তিনটি বিয়ে করলেও তার সংসার টিকেনি নেই। তার প্রথম দুই সংসারের দুই ছেলে প্রবাসে থাকে।

তিনি আরও বলেন, অসুস্থ প্রিয়াংকাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজ্জামান ও সিভিল সার্জন ডা. হাসান শাহরিয়ার কবীরের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।