গাজায় ব্যাপক ইসরায়েলি হামলা, মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় শুক্রবার রাত থেকে তীব্র বোমা হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী। বিমান, ট্যাংক ও কামানের অবিরাম হামলায় বন্ধ হয়ে গেছে গাজার ল্যান্ডফোন, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবা। ফলে হামাস নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলটি বিশ্ব থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে ফিলিস্তিনি টেলিযোগাযোগ সংস্থা জাওয়াল জানিয়েছে, তীব্র ইসরায়েলি বোমা হামলায় মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।

পশ্চিম তীরের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি বলেছে, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ গাজায় সব ল্যান্ডলাইন, সেলুলার ও ইন্টারনেট যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার কারণে তারা গাজায় তাদের অপারেশন রুমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না এবং মাঠকর্মীদের সব যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর অচল হয়ে পড়ায় হতাহতদের উদ্ধারে অ্যাম্বুলেন্সগুলো যেতে পারছে না।

একই পরিস্থিতির কথা বলেছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ, আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অ্যাকশনএইড ও ফিলিস্তিনে জাতিসংঘের ত্রাণ সংস্থা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে,গাজায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার মানে হলো অ্যাম্বুলেন্স ও সিভিল ডিফেন্স দলগুলো ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে আহত বা ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে থাকা মানুষদের কাছে পৌঁছাতে পারবে না।

গাজার বাসিন্দারা বলছেন, তাদের প্রিয়জনরা ‘এখনও জীবিত আছে কিনা’, তা নিশ্চিত করার মানুষজন একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না। এটি এক ধরনের ভাষা, যা যুদ্ধ হওয়ার পর থেকে গাজাবাসী তাদের পরিচিতজনদের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করছেন- ‘আপনি কি এখনও বেঁচে আছেন?’

তারা বলছেন, গাজায় কী ঘটছে সে সম্পর্কে পুরো বিশ্বকে অন্ধকারে রাখতেই যোগাযোগ ব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে দিয়েছে ইসরায়েল।

গাজাকে বিশ্বকে থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন কংগ্রেসের নারী সদস্য আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও। সোশ্যাল মিডিয়ায় এক পোস্টে তিনি বলেছেন, ২২ লাখ মানুষের সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করাটা অগ্রহণযোগ্য। সাংবাদিক, চিকিৎসা পেশাজীবী, বেসামরিক মানুষ ও মানবিক প্রচেষ্টা, সবকিছুই বিপন্ন।

ইসরাইলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি এক বিবৃতিতে বলেছেন, গাজায় অভিযানের পরিসর বাড়ানো হয়েছে। বিমান বাহিনী মাটির নিচের নিশানা এবং সন্ত্রাসী অবকাঠামোর ওপর ব্যাপক বোমাবর্ষণ করছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, গাজায় তীব্র মাত্রায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় সেখানকার খবর খুব কমই পাওয়া যাচ্ছে।