টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : ক’দিন বাদেই ঈদ। উত্তরবঙ্গসহ দেশের ২১ টি জেলার হাজার হাজার মানুষ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ব্যবহার করে ঈদ যাত্রায় নাড়ীর টানে ঘরে ফিরবে। বিগতদিনে ঈদ যাত্রায় ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থাকায় চরম ভোগান্তীর অভিজ্ঞতাও রয়েছে তাদের। দুর্ভোগ লাগবে সরকারের চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ এখন অনেকটা দৃশ্যমান। এর মধ্যে যোগাযোগ মন্ত্রী গতকাল চন্দ্রায় ফোর লেনের কাজ দেখতে এসে সোমবার থেকে ফোরলেন খুলে দেবার কথা বলেছেন। তবে বড় প্রকল্প হওয়ায় তৈরি হয়েছে বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা।
বারবার সময় বাড়িয়েও ঠিকারদারী প্রতিষ্ঠানগুলি নির্মাণ কাজ শেষ করতে পরেনি মহাসড়কের চার লেন উন্নয়নের কাজ। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে ২৬টি ব্রীজ, ৬০টি কালভাট, ৩টি ফ্লাইওভার, ১০টি আন্ডারপাস ও রেল ওভারপাসের মতো বড় বড় অবকাঠামোর। এর মধ্যে কর্তৃপক্ষ দাবী করছে ২৬টি বীজের মধ্যে ২৪ ব্রীজ, ৬০টি কালভাটের মধ্যে ৫২টি কালভাটের কাজ শেষ। ৩টি ফ্লাইওভারের মধ্যে ১টির কাজ চলমান অপর দু’টি ঈদের পরে কাজ শুরু করা হবে। অন্যদিকে ১০টি আন্ডারপাস ও রেল ওভারপাসের মতো বড় বড় অবকাঠামোর মধ্যে চারটির কাজ চলমান রয়েছে। এদিকে ফোর লেন সড়কের অনেকাংশ দৃশ্যমান হলেও সড়কের বড় একটি অংশের কাজ এখনো শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এর ফলে ঈদ যাত্রায় পুরোপুরি ভাবে প্রস্তুত নয় ঢাক-টাঙ্গাইল মহাসড়ক। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যানজট ও ভোগান্তী মুক্ত ঈদ যাত্রার আশ্বাস দেয়া হলেও প্রতিবন্ধকতাগুলোর কারণে এবারেও যানজটের শঙ্কায় এ সড়ক ব্যবহারকারীরা।
সরেজমিনে ও মহাসড়কে চলাচলকারী চালক ও যাত্রীরা বলেন, গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৬৫ কি.মি সড়ক। উত্তর বঙ্গের ঢাকার প্রবেশ মুখ চন্দ্রার ত্রিমুখি গোলচত্ত্বরের ফ্লাইওভার, কালিয়াকৈর সরু রেল ওভারপাস, কালিয়াকৈর বাসস্ট্যান্ডে চলমান আন্ডারপাস, ধেরুয়ায় চলমান রেল ওভারপাস, সোহাগপুর ব্রীজ, ধেরুয়া চলমান রেল ওভারপাস, মির্জাপুর বাসস্ট্যান্ডের চলমান আন্ডারপাস, পাকুল্লা ব্রীজ, করোটিয়া ব্রীজ, তারুটিয়া ব্রীজ, ঘারিন্দা আন্ডারপাস, রাবনা ও এলেঙ্গায় ফ্লাই ওভারের তৈরির এপ্রোচ সড়কে এখনো স্বাভাবিক যানচলাচলে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এসব স্থানে চার লাইন এসে এক লাইনে পরিনিত হয়েছে। প্রত্যেকটি ব্রীজের উপর কংক্রিটের একাধিক গতিরোধক থাকায় গাড়ী স্বাভাবিক গতি বিঘ্নিত হচ্ছে। মহাসড়কের বড় একটি অংশে ফোর লেনের উন্নয়নের কাজ চলমান থাকায় ক্ষণে ক্ষণে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। অতিরিক্ত গাড়ীর চাপে যে কোন সময় দীর্ঘ যানজটের শঙ্কা করছেন তারা।
এ বিষয়ে ফোরলেন প্রকল্পের পরিচালক জিকরুল হাসান উন্নয়ন কাজ চলমান থাকায় তার কিছুটা প্রতিকন্ধকতা থাকার কথা স্বীকার বলেন, প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায় সব রকমের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ইত্যেমধ্যে বিকল্প সড়ক ও বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ঈদ যাত্রায় অতিরিক্ত গাড়ীর চাপ সামাল দিতে কোন সমস্যা হবে না বলে জানালেন তিনি।
টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রয় বলেন, যানজটমুক্ত ও নিরাপত্তার বিষয়টিকে সামনে রেখে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। মহাসড়কটিকে তিনটি ভাগে ভাগ করে আলাদা আলাদা টিম গঠন করা হয়েছে। নিয়মিত ৫০০ পুলিশ সদস্যের সাথে ভ্রাম্যমান ৪০টি মোটরসাইকেল টিম সার্বক্ষনিক নিয়োজিত আছে। এছাড়াও প্রশাসন, সিভিল সোসাইটি ও পরিবহণ কর্তৃপক্ষকে সাথে একটি সমন্বয় কমটি গঠন করা হয়েছে।
সব খবর/ টাঙ্গাইল/ ১২ জুন ২০১৮/ লিটন