বিশেষ প্রতিবেদক : মানিকগঞ্জের ঘিওরে একটি প্রাইমারি স্কুলের সভাপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।মারধর করা হযেছে স্কুলের দপ্তরিকেও।
রোববার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার শ্রীবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এঘটনা ঘটে।প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন রেখেছেন শিক্ষকরা। ঘটনার সুষ্ঠু সমাধান না হলে কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুমকি দিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।
প্রধান শিক্ষক নাসিমা খানম জানান, সম্প্রতি নির্বাচনী তফসিলের মাধ্যমে স্কুলের ৪ জন অভিভাবক (পুরুষ ও মহিলা)সদস্য নির্বাচিত হন।কিন্তু স্কুলের বিদ্যুতসাহী সদস্য আবুল বাশার অভিভাবক সদস্য যথাযথ ভাবে নির্বাচন হয়নি মর্মে শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ করেন। রোববার বেলা ১১ টায় এ অভিযোগের তদন্তে শিক্ষা কর্মকর্তারা স্কুলে আসার কথা ছিলো। কিন্তু সময় পরিবর্তন করে বেলা ২ টায় বাদীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা খন্দকার তার কার্যালয়ে ডাকেন।
এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বিদুৎসাহী সদস্য আবুল বাশার, বড়টিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শামছুল আলম রওশন, মো:শামীম, আব্দুল হাই, পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আ:আজিজের নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জন ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী স্কুলে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে অকত্য ভাষায় গালাগালি করতে থাকে। এসময় দপ্তরী মো:হাফিজ প্রতিবাদ করলে তাকে মারধর করা হয়। ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়াসহ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয় প্রধান শিক্ষক নাসিমা খানমকে।
স্থানীয় বাসিন্দা ওয়াজ উদ্দিন পাগল জানান, প্রধান শিক্ষকের আত্মচিৎকারে তারা ৫/৭ জন স্কুলে গেলে সন্ত্রাসীরা চলে যায়। এসময় প্রধান শিক্ষক অনেক কান্নাকাটি করতে ছিলেন। তিনি অফিস রুমেই ঢুকতে চাচ্ছিলেন না। পরে প্রধান শিক্ষক টেলিফোনে বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানান।
খবর পেয়ে ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, শিক্ষক নেতারা ঘটনাস্থলে আসেন।
প্রধান শিক্ষক নাসিমা খানম এ বিষয়ে ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।থানায়ও অভিযোগ করবেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আবুল হাসেম জানান, বিদুৎসাহী সদস্য আবুল বাশারকে বিনাভোটে সভাপতি বানানোর জন্যই একটি চক্র নানা অপতৎরতা চালাচ্ছে। নানা কায়দায় তারা দুই দফা নির্বাচন স্থগিত করে। তৃতীয় দফা তফসিল অনুযায়ি আগামী ১৫ মে সভাপতি নির্বাচনের ভোট গ্রহন। অথচ বাশার মনোনয়নপত্রই সংগ্রহ করেননি কিন্তু নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছেন।
প্রধান শিক্ষককে লাঞ্ছিত ও দপ্তরীকে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে বড়টিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক অভিযুক্ত শামছুল আলম রওশন সব অস্বীকার করেন। তিনি জানান,দপ্তরী হাফিজই তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেছেন।
ঘিওর উপজেলা সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি আবুল হোসেন জানান, শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি না হলে উপজেলার সকল শিক্ষকদের নিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে।তিনি জানান,এঘটনায় ওই স্কুলের শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
সব খবর/ মানিকগঞ্জ/ ১৩ মে ২০১৮/ লিটন