ভারত-আফগানিস্তান ম্যাচ টাই

Indian batsman Dinesh Karthik (C) plays a shot as Afghan cricketer Mohammad Shahzad (L) looks on during the one day international (ODI) Asia Cup cricket match between Afghanistan and India at the Dubai International Cricket Stadium in Dubai on September 25, 2018. (Photo by ISHARA S. KODIKARA / AFP) (Photo credit should read ISHARA S. KODIKARA/AFP/Getty Images)

আগেই ফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত। ছিটকে গেছে আফগানিস্তান। ফলে ম্যাচটি ছিল কেবল নিয়মরক্ষার, আনষ্ঠানিকতা সারা মাত্র। তবে বাস্তবে ভিন্ন চিত্র। ম্যাচের পরতে পরতে ছড়িয়ে থাকল উত্তেজনা। পুরো ম্যাচ পেন্ডুলামের মতো হয়ে দুললো। শেষ পর্যন্ত কোনো দলই গাল ভরে হাসতে পারল না। রূদ্ধশ্বাস ভারত-আফগানিস্তান ম্যাচ টাই হলো।

আফগানিস্তানের দেয়া ২৫৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত শুরু করেন লোকেশ রাহুল ও আম্বাতি রাইডু। শুরু থেকেই স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছোটান তারা। বাজে বল পেলেই তা সীমানাছাড়া করেন দুই ওপেনার। তাতে দুরন্ত গতিতে ছুটে টিম ইন্ডিয়া।

তবে হঠাৎই খেই হারান রাইডু। মোহাম্মদ নবীর বল বাউন্ডারির বাইরে আছড়ে ফেলতে গিয়ে নাজিবুল্লাহ জাদরানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে অবশ্য ক্যারিয়ারের অষ্টম ফিফটি তুলে নেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ৪৯ বলে ৪টি করে চার-ছক্কায় ৫৭ রান করেন তিনি।

পার্টনার হারিয়ে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি লোকেশ। সাজঘরের পথ ধরেন তিনিও। তাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলে ফেরান মায়াবী ঘাতক রশিদ খান। ফেরার আগে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি তুলে নেন রাহুল। ৬৬ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৬০ রান করে ফেরেন তিনি।

অবশ্য শুভসূচনা এনে দিয়ে ফেরেন রাইডু-রাহুল। তবে ব্যাটে তাদের বাজানো সুর তুলতে পারেননি মাহেন্দ্র সিং ধোনি। খানিক বাদে জাভেদ আহমাদির এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। ক্যাপ্টেন কুল নিজের ব্যক্তিগত খাতায় তুলতে পারেন মাত্র ৮ রান। ব্যর্থ হন মনীশ পান্ডেও। আফতাব আলমের বলে উইকেটের পেছনে মোহাম্মদ শাহজাদের তালুবন্দি হয়ে ফেরেন তিনি। এতে খেলায় ফিরে আফগানিস্তান।

একে একে টপঅর্ডাররা ফিরলেও একপ্রান্ত আগলে থেকে যান দিনেশ কার্তিক। বিপর্যয়ের মুখে কেদার জাদবকে নিয়ে দলকে টেনে তুলতে থাকেন তিনি। তাকে যোগ্য সহযোদ্ধার সমর্থন দেন ব্যাটিং অলরাউন্ডারও। তবে দুর্ভাগ্য জাদবের (১৯)। মুজিব-উর রহমানের হাতে লেগে রানআউটে কাটা পড়েন তিনি। সঙ্গী হারিয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি কার্তিকও। নবীর বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তিনি। ফেরার আগে ৬৬ বলে ৪ চারে ৪৪ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন কার্তিক। কিছুক্ষণ পরই আফতাব আলমের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন দীপক চাহার।

মঙ্গলবার দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং নেন আফগানিস্তান অধিনায়ক আসগার আফগান। তার সিদ্ধান্তকে যৌক্তিক প্রমাণ করেন বিস্ফোরক ওপেনার মোহাম্মদ শাহজাদ। শুরু থেকেই ভারতীয় বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলেন তিনি। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন জাভেদ আহমাদি। দলীয় ৬৫ রানে ফেরেন এ ব্যাটসম্যান। এতে উদ্বোধনী জুটি ভাঙে আফগানদের।

এরপরই পথ হারায় আফগানিস্তান। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে মধ্যপ্রাচ্যের দলটি। তবে একপ্রান্তে সবাই যাওয়া-আসার মধ্যে থাকলেও অপরপ্রান্তে নিজের স্বভাবজাত খেলাটাই খেলে যান শাহজাদ। মাত্র ৩৭ বলে হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। সেঞ্চুরি তুলে নিতেও সময় নেননি বিধ্বংসী ওপেনার। দলের চরম বিপর্যয়ের মধ্যেও মাত্র ৮৮ বলে তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি।

অথচ মাঝের পাঁচ ব্যাটসম্যান মিলে সর্বসাকুল্যে করেন ২৩ রান। ফলে বিপদসঙ্কুল পথ পাড়ি দিয়ে এ সেঞ্চুরি হাঁকাতে হয় শাহজাদকে। শেষ পর্যন্ত ১২৪ রানে আউট হন তিনি। ১১৬ বলের মারকুটে ইনিংসে ১১টি চার ও ৭টি ছক্কা হাঁকান আফগান এ উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। এত ঝকঝকে ইনিংসেও বিপদ কাটিয়ে উঠতে পারেনি আফগানিস্তান।

পরে দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলকে উদ্ধার করেন মোহাম্মদ নবী। টার্নিং পয়েন্টে ৫৬ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৪ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন তিনি। এতে লড়াকু পুঁজি পায় আসগার বাহিনী। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ২৫২ রান করে তারা। ভারতের হয়ে সবচেয়ে সফল ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। ৪৬ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন তিনি। ২ উইকেট শিকার করে কুলদ্বীপ যাদব।