প্রেমের ফাঁদে জিম্মি ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা, ৯৯৯-এর সহায়তায় উদ্ধার

প্রেমের ফাঁদে ফেলে যুবকদের জিম্মি করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এ চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য।

‘৯৯৯’- এ কল পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করেছে এদের ফাঁদে পড়া এক ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তাকে।

শুক্রবার সকালে নগরীর আকবর শাহ থানাধীন ইউএসটিসির সামনে থেকে মুক্তিপণের চেক নিতে গিয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয় প্রতারক চক্রের সদস্যরা।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চট্টগ্রাম কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ইফতেখার আলম (২৫), ইউএসটিসির (ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি চিটাগাং) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র তালিম উদ্দিন (২৪) এবং আইআইইউসি (ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি চিটাগাং) থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পন্ন করা সালেহিন আরাফাত।

পুলিশ সূত্র জানায়, একটি ওষুধ কোম্পানির কর্মকর্তা হাসান তারেকের (৩৭) সঙ্গে দুই সপ্তাহ আগে পরিচয় হয় ইসরাত জাহান (১৯) নামে এক তরুণীর। পরিচয়ে সূত্র ধরে দুজনের মধ্যে মোবাইল নম্বর বিনিময় হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই তারেককে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ইসরাত।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তারেককে নগরীর বিশ্বকলোনীর বাসায় দাওয়াত দেয় ইসরাত। ইসরাতের কথা অনুযায়ী সন্ধ্যায় তার বাসায় যায় তারেক। কিছুক্ষণ পর ওই বাসায় ঢুকে ইসরাতের চার সহযোগী।

তারা তারেককে জিম্মি করে তার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। অন্যথায় মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে পুলিশে তুলে দেওয়ার ভয় দেখায়।

একপর্যায়ে তারেক বিকাশের মাধ্যমে ২৪ হাজার টাকা এনে দেন তাদের। ২৪ হাজার টাকা পাওয়ার পর তারা আরও বেশি টাকা দাবি করতে থাকে এবং সারারাত তাকে ওই বাসায় আটকে রাখে।

শুক্রবার সকালে তারেক তার বোন শারমিন ফারজানাকে ফোন করে ব্যাংকের চেক বই থেকে দুটি খালি চেক নিয়ে ইউএসটিসির সামনে আসতে বললে ফারজানার সন্দেহ হয়। তিনি ‘৯৯৯’ -এ ফোন করে সহায়তা চাইলে বিষয়টি খুলশী থানাকে জানানো হয়।

এরপর খুলশী থানার পুলিশের একটি টিম ছদ্মবেশে ইউএসটিসির সামনে অবস্থান নেয়। সকাল ৯টার দিকে প্রতারক চক্রের তিন সদস্য চেক নেওয়ার জন্য ইউএসটিসির সামনে আসলে ওঁৎ পেতে থাকা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।

পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হাসান তারেককে উদ্ধার করা হয়। তবে প্রতারক চক্রের সদস্য ইসরাত এবং অপর একজন ধরা পড়েনি।

খুলশী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রণব চৌধুরী জানান, বিভিন্ন কলেজে পড়ুয়া কিছু শিক্ষার্থী মিলেই এই প্রতারক চক্র গড়ে তুলেছে। যুবকদের টার্গেট করে প্রথমে মেয়ের প্রেমের ফাঁদে ফেলে তারা। এরপর জিম্মি করে আদায় করে অর্থ।

তিনি জানান, ঘটনাটি আকবর শাহ থানাধীন এলাকায় হওয়ায় গ্রেপ্তারকৃতদের ওই থানার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আকবর শাহ থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ঘটনার শিকার তারেক হাসানের বোন শারমিন ফারজানা বাদী হয়ে এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন।