ছাত্রীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে শিক্ষক বললেন দুর্ঘটনা

যশোরের শার্শায় পঞ্চম শ্রেণির এক মাদরাসাছাত্রীর শ্লীলতাহানি করেছেন শিক্ষক। মঙ্গলবার ওই ছাত্রীর বাবা এ অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সদস্য ডাক্তার নূরুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শ্লীলতাহানির শিকার ছাত্রীর বাবা জানান, তার মেয়ে বাগআঁচড়া সাতমাইল আলিম মহিলা মাদরাসার পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। রোববার (২৮ এপ্রিল) তার মেয়েকে শিক্ষক শরিফুল ইসলাম কাছে ডেকে নিয়ে অন্যান্য ছেলে-মেয়েদের লিখতে দিয়ে তার স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। এর আগেও মেয়েটিকে ওই শিক্ষক কয়েকবার কু-প্রস্তাব দেন। মেয়েটি লোকলজ্জায় কাউকে কিছু বলেনি। এরপর শিক্ষকের আচরণ এতটাই বেপরোয়া হয়ে যায় যে, বাধ্য হয়ে মেয়েটি বিষয়টি বাড়িতে জানায়। এ ব্যাপারে মাদরাসা পরিচালনা কমিটি বিচারের আশ্বাস দিলেও এখনো কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

মাদরাসাছাত্রী জানায়, শরিফুল স্যার আমাকে মারার উদ্দেশ্যে কয়েকবার জামার পেছন দিয়ে গায়ে হাত দিয়েছেন এবং কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছেন। বিষয়টি মাদরাসার ম্যাডাম শাহনাজ দেখে আমাকে ডাকলে, আমি সব ঘটনা তাকে খুলে বলি। ঘটনাটি মাদরাসার অধ্যক্ষকে জানান ওই ম্যাডাম। আমার শরীরে ওই স্যার অনেকবার জামার পেছন দিয়ে হাত দিয়েছেন। উনি আমার সঙ্গে যেভাবে কথা বলেছেন বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হয় সবার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, সামান্য একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে মাদরাসা পরিচালনা কমিটি স্কুলে বসে মীমাংসার দায়িত্ব নিয়েছে।

মাদরাসার অধ্যক্ষ মহসিন হোসেন বলেন, এ ঘটনার দায়িত্ব পরিচালনা কমিটি নিয়েছে। কমিটি বসে বিষয়টি দেখবে বলে আশ্বাস দিয়েছে। তবে ঘটনাটির প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়ায় শিক্ষক শরিফুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাগআঁচড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইলিয়াছ কবির বকুল বলেন, আমি প্রিন্সিপালের কাছে শুনেছি শরিফুল নামে এক শিক্ষক একটি মেয়েকে উত্ত্যক্ত করেছেন। বিষয়টি তারা মীমাংসার দায়িত্ব নিয়েছেন এবং ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। তবে এ ধরনের শিক্ষক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে না থাকাই ভালো।

মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি এয়াকুব বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনায় ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং বিষয়টি শিক্ষা অফিসার, এলাকার চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে অপরাধীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।