আ.লীগ নেতার বাড়ি থেকে উদ্ধার অপহৃত সরকারি কর্মকর্তা

লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার হাফানিয়া গ্রামে বাড়ি থেকে তুলে নেয়ার ৪ঘণ্টা পর রাত ৮টায় স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় উদ্ধার পেয়েছেন গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সহকারী হিসাব রক্ষক মোঃ নজরুল ইসলাম বাবু। মঙ্গলবার রাতে ভোলাকোট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বশির আহমেদ মানিকের বাড়ি থেকে সরকারি এ কর্মকর্তাকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সরকারি কর্মকর্তাকে অপহরণের ঘটনা নিয়ে তিনটি পক্ষ রামগঞ্জ থানায় পাল্টাপল্টি অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে ভূক্তভোগী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে ভোলাকোট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা বশির আহম্মেদ মানিকসহ ৪জনের বিরুদ্ধে রামগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। একই ঘটনায় বুধবার আবুল কাশেম ও নুরজাহান বেগম নামের আরো দুইজন দুইটি অভিযোগ দায়ের করেন রামগঞ্জ থানায়।

থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের হাপানিয়া গ্রামের হতদরিদ্র আবুল কাশেম ও তার ভাইয়ের সাথে সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। বিরোধ নিরসনে আবুল কাসেম ভোলাকোট ইউনিয়ন পরিষদ আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান একতরফা বিবাদীপক্ষে অবস্থান নেয়ার সুযোগে বিরোধকৃত সম্পত্তিতে প্রতিপক্ষ স্থাপনা নির্মান শুরু করে। পরে একইবাড়ির প্রতিবেশী সরকারি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম এর প্রতিবাদ করেন।

এ ঘটনায় চেয়ারম্যান ক্ষীপ্ত হয়ে মঙ্গলবার দুপুরে নজরুলকে মোবাইলে হুমকি-ধমকি প্রদান করেন। পরে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় দেবনগর গ্রামের মাসুদ, নূর হোসেন, রিশাদসহ ১০/১৫ জনের একটি গ্রুপ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে নজরুল ইসলাম বাবুর বাড়িতে গিয়ে তাকে বেদম মারধর করে। পরে অস্ত্র ঠেকিয়ে জোরপূর্বক সিএনজিতে তুলে চেয়ারম্যানের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানেও তাকে বেদম মারধর করে চেয়ারম্যানের লোকজন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নজরুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যানের নির্দেশে সন্ত্রাসীরা আমাকে পিটিয়ে নগদ টাকা এবং একটি মোবাইল সেট নিয়ে যায়। পুলিশ আসার খবর পেয়ে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে আমার নিকটাত্মীয়রা চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা বশির আহমেদ মানিক বলেন, হাফানিয়া গ্রামের আবুল কাসেম সোলনামা দিয়ে প্রতিপক্ষকে বসতঘর তোলার সুযোগ দেয়। কিন্তু নজরুল ইসলাম মন্ত্রাণালয়ের স্টাফ হয়ে এলাকাতে অবস্থান করে অনাধিকার চর্চা করে। তাকে আমার বাড়িতে ডেকে আনতে দলীয় লোকজন তার বাড়িতে গেলে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তুলে আনা বা মারধরের ঘটনা সঠিক নয়।

এ ব্যাপারে রামগঞ্জ থানার এসআই কাউছার জানান, প্রাথমিকভাবে আমরা জানতে পেরেছি নজরুল ইসলামকে বাবুকে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনায় পৃথক তিনটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। রামগঞ্জ থানার ওসি মোঃ তোতা মিয়া জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ পেয়েছি। অপহরণের বিষয়টি সত্য নয়। তদন্ত চলছে, অভিযোগগুলোর তদন্ত করছেন রামগঞ্জ থানার এসআই কাউসারুজ্জামান।