৩ ব্যক্তির কাছে ২১ ব্যাংকের মূলধন

ব্যাংকের বড় ঋণ বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতে বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। বর্তমানে মাত্র ৩ জন ব্যক্তির হাতে ঋণ হিসাবে আছে ২১ ব্যাংকের মূলধন। সুতরাং এই ৩ ব্যক্তি যদি কোনো কারণে ঋণ খেলাপি হয় তাহলে দেশের ২১টি ব্যাংক মূলধন সংকটে পড়বে বলে আভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক।

বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংকের প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেটেড’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান অর্থনীতিবিদ এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩ জন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে ২১ ব্যাংকের মূলধন, ৭ জনের কাছে ৩১ ব্যাংকের মূলধন ও ১০ জন বড় ঋণগ্রহীতার কাছে রয়েছে ৩৫টি ব্যাংকের মূলধন রয়েছে।

কোনো কারণে তারা যদি ঋণখেলাপি হয়ে যান, তাহলে এসব ব্যাংক তাদের মূলধন সংকটে পড়ে যাবে। প্রতিবেদনে সংকট উত্তরণে বড় ঋণ পরিহারের পরামর্শ দেওয়া হয় ব্যাংকগুলোকে।

জাহিদ হোসেন বলেন, ব্যাংকগুলো যে ঋণ দেয় তার বিপরীতে কিছু জামানত নেওয়া হয়। এই বন্ধকী জামানতও যদি বিক্রি করে খেলাপি ঋণ আদায় করা হয়, তাহলে সংকট থাকবে। ব্যাংকের কাছে জমা রাখা এই জামানতের যদি ১০, ২০ ও ৪০ শতাংশ মূল্য কমে যায় তাহলে ২, ৫ ও ৯টি ব্যাংক মূলধন ঘাটতিতে পড়বে। সব মিলিয়ে যদি ব্যাংকের ঝুঁকি পর্যালোচনা করি, তাহলে চিত্রটি অনেক গভীর। সব মিলিয়ে বলা যায় ব্যাংকিং খাতে কালো ঘন মেঘ ঘূর্ণিঝড়-তুফানে পরিণত হতে পারে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মুদ্রানীতির প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো হলো ব্যাংকিং খাত। যার মাধ্যমে আমরা মুদ্রানীতি পরিচালনা করা হয়। সেই খাতে বেশ কিছু দুর্বলতা আগে থেকেই ছিল। ইদানিং সেই দুর্বলতা আরও বেড়েছে। এর উদাহরণ হলো বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট।

ঋণ খেলাপিদের ৯ শতাংশ সরল সুদে ঋণ পরিশোধের সুযোগ দিতে অর্থমন্ত্রীর ঘোষণার সমালোচনা করে জাহিদ হোসেন বলেন, এভাবে ঋণ পরিশোধের সুযোগ করে দিলে ব্যাংকগুলো আরো দুর্বল হয়ে পড়বে। বারবার খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করার পরিবর্তে ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলেও জানান তিনি।