কারাগারের নির্জন সেলে ক্যাসিনো গুরু, দেখা করতে আসেননি স্ত্রীও

ক্যাসিনো কেলেঙ্কারিতে ছয় মাসের দণ্ডপ্রাপ্ত ঢাকা মহানগর যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা এনামুল হক আরমানকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি নির্জন সেলে রাখা হয়েছে। ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ওরফে সম্রাটের ‘ক্যাসিনো গুরু’ হিসেবে পরিচিত আরমান। একই সঙ্গে সম্রাটের বন্ধুও তিনি।

সোমবার দিনভর আরমানের পরিবারের কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে আসেননি। এ তথ্য জানিয়েছেন কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার ফোরকান ওয়াহিদ।

কারা সূত্র জানায়, রোববার রাতে আরমানকে কারাগারে আনা হয়। কারাগারে আনার পর রাতে খিচুড়ি, সোমবার সকালে রুটি-সবজি, দুপুরে ডাল-সবজি-ভাত এবং রাতে ভাত-ডাল-মাছ ও সবজি খেয়েছেন আরমান। তবে পরিবারের কোনো সদস্য তার সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে আসেননি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দণ্ডপ্রাপ্ত আরমান ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার সোনাপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে। ব্যক্তিগত জীবনে স্ত্রী, তিন ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে তার সংসার। আরমানকে জেলে পাঠানোর খবর জানলেও দেখতে আসেননি স্ত্রী ও সন্তানরা।

এদিকে, গ্রেফতারের সময় আরমানের পকেট থেকে ইয়াবা উদ্ধারের ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা করা হয়। তদন্ত কর্মকর্তা ওই মামলায় আরমানকে গ্রেফতার দেখানোর জন্য সোমবার আদালতে আবেদন করেছেন।

কারা সূত্র জানায়, আরমানকে ছয় মাসের দণ্ড দেয়া নথিতে মুক্তির সময় উল্লেখ করা হয়েছে ২০২০ সালের ৫ এপ্রিল। তবে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা পরিশোধ না করলে মুক্তি পাবে একই বছরের ১২ এপ্রিল। ২০১৮ সালের মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন র‌্যাব-৪-এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিজাম উদ্দিন আহমেদ।

যুবলীগ নেতা সম্রাট ও তার সহযোগী আরমান চারদিন ধরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামের জামায়াত নেতা ও ফেনীর পৌরসভার মেয়র আলা উদ্দিনের ভগ্নিপতি মনিরুল ইসলাম চৌধুরীর বাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন।

শনিবার রাতে ঢাকা থেকে র‌্যাবের একটি দল ওই বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সময় আরমানকে মদ্যপ অবস্থায় পাওয়া যায় এবং তার পকেট থেকে ১৪০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে র‌্যাব। পরে মাদক সেবনের দায়ে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত আরমানকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন।

কুমিল্লা কারাগার সূত্র জানায়, রোববার রাতে আরমানকে ফেনী থেকে কুমিল্লা কারাগারে আনা হয়। তাকে কারাগারের একটি নির্জন সেলে রাখা হয়েছে। তবে তার সঙ্গে দেখা করতে আসেননি কেউ।

গ্রেফতারের পর ইয়াবা রাখার অপরাধে র‌্যাব-৭-এর কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বাদী হয়ে এনামুল হক আরমানের বিরুদ্ধে চৌদ্দগ্রাম থানায় মামলা করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশের এসআই মনির হোসেন বলেন, র‌্যাবের দায়ের করা ইয়াবা মামলার আসামি আরমান মাদক সেবনের দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড নিয়ে কুমিল্লা কারাগারে আছেন। ইয়াবা উদ্ধারের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন জানিয়ে কুমিল্লার ৫নং আমলী আদালতে আবেদন করা হয়েছে।