সবচেয়ে বেশি কষ্ট পুলিশকেই করতে হয়: প্রধানমন্ত্রী

কাজের কথা বিবেচনা করে সবচেয়ে বেশি কষ্টটা পুলিশকেই করতে হয়। তাদের কোনো কর্মঘণ্টা নেই। মানুষ যখনই চায় তাদের ছুটে যেতে হয়। কিন্তু তারপরও পুলিশের ওপরই আঘাত আসে বেশি। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রংপুর ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ইউনিটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনকালে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জানি দেশকে উন্নত করতে হলে মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা দরকার। আর সেটা করতে হলে পুলিশ বাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে হবে। তারা মানুষের সেবা দেওয়ার কাজটি করে আসছে, সেজন্য পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই।

পুলিশ বাহিনীর সদস্য সংখ্যা ও সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে রংপুর ও গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের দুটি ইউনিট চালু করছি। এতে এই দুই অঞ্চলের মানুষের নিরাপত্তা বাড়বে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।

পুলিশ বাহিনী অত্যন্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে মন থেকে কাজ করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশের ওপর মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস ফিরে এসেছে, যেটা গুরুত্বপূর্ণ। এটা ধরে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। এ সফলতা ধরে রাখার পাশাপাশি মানুষের সেবায় পুলিশকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারেরও পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমি দেখেছি পুলিশ মাত্র ২০ শতাংশ রেশন পেতো, আমি সেখান থেকে তা বাড়িয়ে দিয়েছি, ঝুঁকি ভাতা চালু করা থেকে শুরু করে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিয়েছি, তাদের আবাসন ব্যবস্থা করেছি। প্রতিবছরই পুলিশের জন্য বাজেট বাড়াচ্ছি।

মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের সময় পুলিশের ওপর হামলার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আক্রমণ করা হয় রাজারবাগ পুলিশ লাইনে, এখান থেকেই শুরু হয় প্রথম প্রতিরোধ। বিএনপি-জামায়াত জোটের অগ্নিসন্ত্রাসের শিকারও হতে হয়েছে আমাদের পুলিশকে। ৫শ’ নাগরিকের পাশাপাশি আমাদের ২৭ জন পুলিশ কর্মকর্তা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের অগ্নিসন্ত্রাসে।

জঙ্গিবাদ দমনে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমাদের দেশে বাংলাভাই এর মধ্য দিয়ে জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটেছিল। পুলিশ বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই, তারা সময়োচিত সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশকে জঙ্গিবাদমুক্ত রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের মুখ্যসচিব মো: নজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন, পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) প্রমুখ।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যক্রম
নতুন পোশাকে নতুন মুখের সংযোজনে কার্যক্রম শুরু হয়েছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। রংপুর সদর, মিঠাপুকুর, বদরগঞ্জ, কাউনিয়া ও পীরগাছার কিছু অংশ রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ এলাকায় থাকছে। এর থানাগুলো হচ্ছে- কোতোয়ালি, পরশুরাম, তাজহাট, মাহিগঞ্জ, হারাগাছ ও হাজীরহাট।

গাজীপুর মহানগর পুলিশের কার্যক্রম
আর গাজীপুর মহানগর পুলিশের কার্যক্রমও চলবে আটটি থানা নিয়ে। এ থানাগুলো হলো- গাজীপুর সদর, কাশিমপুর, কোনাবাড়ি, বাসন, গাছা, পূবাইল, টঙ্গী পূর্ব ও টঙ্গী পশ্চিম।