মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণ করুন : রাষ্ট্রপতি

বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস সংরক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী একটি চক্র সুযোগ পেলেই মুক্তিযু্দ্ধের ইতিহাস বিকৃত করতে উঠে পড়ে লাগে। অতীতেও এ চক্রটি আমাদের মুক্তিসংগ্রাম ও মহান মুক্তিযু্দ্ধের ইতিহাসকে বারবার বদলাবার অপচেষ্টা করেছে।’ আজ সোমবার বঙ্গভবনে একটি বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘সাময়িকভাবে তাদের চেষ্টা সফল হলেও চূড়ান্তভাবে তারা পরাস্ত হয়। ইতিহাস তার নিজস্ব গতিতে চলে। কেউ তা বদলাতে পারে না। বরং যারা এ অপচেষ্টা করে তারাই ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়।’

মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হামিদ বলেন, ‘বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যাতে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে তা নিশ্চিত করা আমাদের সবার পবিত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য।’

রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মো. সরোয়ার হোসেন রচিত ‘১৯৭১: প্রতিরোধ সংগ্রাম বিজয়’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাকর্ম। এতে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গবেষণার অনেক উপকরণ রয়েছে। ’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বইটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংবলিত একটি ঐতিহাসিক দলিল। বইটিতে মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষিত ও পটভূমি, সামরিক অবস্থান, প্রাথমিক প্রতিরোধ, মুক্তিযুদ্ধকালীন সেক্টর কমান্ডার ও সেক্টর সমূহের বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।’

রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, ‘এ ছাড়া নিয়মিত বাহিনীর পাশাপাশি অনিয়মিত বিভিন্ন বাহিনীর কর্মকাণ্ড, মুক্তিযুদ্ধে তাদের অবদান, রণকৌশল, সাফল্য, গণমাধ্যমের ভূমিকা ইত্যাদি বিষয়গুলোও বিশদভাবে স্থান পেয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের কৌশলগত বিভিন্ন দিক এবং প্রচলিত যুদ্ধের পাশাপাশি অপ্রচলিত ও গেরিলা যুদ্ধের বিষয়টিও গুরুত্বের সাথে উপস্থাপন করা হয়েছে।’

রাষ্ট্রপতি আক্ষেপ করে বলেন, ‘মুক্তিসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক লেখালেখি হলেও গবেষণাধর্মী বইয়ের সংখ্যা খুব একটা বেশি না।’

রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, লেখক, গবেষক, সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীরা মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিসংগ্রাম নিয়ে গবেষণা চালাবেন। এতে ভবিষ্যত মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারবে, নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ করতে পারবে। দেশ ও জাতি উপকৃত হবে। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে।

জাতীয় অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ইমিরেটাস অধ্যাপক ড. এ কে আজাদ চৌধুরী, অধ্যাপক সৈয়দ মন্জুরুল ইসলাম, অধ্যাপক মোহাম্মদ জাফর ইকবাল ও আলোচ্য বইটির লেখক মো. সারোয়ার হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।