চরফ্যাশন অফিস: সংসদ সদস্য শেখ হেলাল এমপির ছেলে বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ ও উদয়ীমান তারুণ্যের প্রিয়মুখ শেখ শারহান নাসের তন্ময়কে নিয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী, ভোলা-১ আসনের এমপি তোফায়েল আহাম্মেদ এর স্নেহধন্য (তোফায়েলের পুত্র দাবিদার) ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মঈনুল হোসেন বিপ্লল কর্তৃক ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্যের প্রতিবাদে বাগেরহাটসহ সারাদেশে ঝাড়ু মিছিল ও কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিপ্লবকে দল ও পদ থেকে বহিস্কারের দাবিতে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলো বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
“১৬ই ডিসেম্বর ভোলা শহরের বাংলাস্কুল মাঠে আয়োজিত জেলা আওয়ামী লীগের বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় শেখ শারহান নাসের তন্ময়কে নিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ মন্তব্য করেন মঈনুল হোসেন বিপ্লব। পরবর্তীতে সামাজিক যোগাযোগ ফেইসবুকে তা ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া সেই বক্তব্যে তিনি যা বলেছেন- পাঠকদের কাছে তা তুলে ধরা হলোঃ-
“আমাকে একটা বিশাল জায়গায় প্রশ্ন করেছেন আপনিতো রাজনৈতিক ব্যক্তি নন, ইতিহাস নয়, আপনি ছাত্রলীগ করেন নাই, যুবলীগ করেন নাই, আপনি কিভাবে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হলেন? উত্তর দিয়েছি- জাতীয় নেতা রাজ্জাক সাহেব তিনি মারা যাওয়ার পর তার ছেলে নাহিম রাজ্জাক কিভাবে এমপি হলেন? আমাদের শেখ হেলাল সাহেব তার ছেলে শেখ তন্ময় সাহেব কিভাবে এমপি হলো? প্রশ্ন: করেছি উত্তর দিতে পারে নাই নিস্তব্ধ হয়ে গেছে। বলেছি, আমি তোফায়েল আহমেদের সন্তান (নিজকে তোফায়েল পুত্র হিসেবে দাবিদার) তোফায়েল আহমেদ যতদিন বেঁচে আছেন ততদিন আমাদের সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে উঠার প্রয়োজন আছে? আছে? আছে? অসন্মান করছি না আমি অন্য কাউকে, আমার কথা বলছি। নেতার সন্তান হিসেবে আমার অধিকারের কথা বলছি!”
বিপ্লবের এমন কথার একটি ভিডিও বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ ফেইসবুকে ভাইরাল হওয়ার সাথে সাথেই সারাদেশে সমালোচনার ঝড় উঠে।
এদিকে, বিপ্লবের বহিস্কারের দাবি জানিয়ে ১৯ ডিসেম্বর বাগেরহাট জেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কুশপুত্তলিকা দাহসহ বিক্ষোভ সমাবেশ করছেন আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতা- কর্মীরা। সেই সাথে বিভিন্ন জেলারও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে।
শেখ তন্ময়কে নিয়ে তোফয়েল পুত্র দাবিদার ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাঈনুল হোসেন বিপ্লব কর্তৃক নানা কটুক্তির প্রতিবাদে ২১ ডিসেম্বর সোমবার সকালে রাজধানীর পেস ক্লাবের সামনে “তারুণ্যের বাংলাদেশ” ব্যানারে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। এসময় তারা মঈনুল হোসেন বিপ্লবের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের আহমেদ, কেন্দ্রীয় যুবলীগ সদস্য মোঃ নুর আলম মিয়া, বাংলা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এইচএম জাহিদ মাহমুদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক শেখ নাজমুল হোসাইন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সুকান্ত ব্রক্ষ্ণ, সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক গাজী মিরাজ হোসাইন, সাবেক সহ-সম্পাদক মাহমুদ হোসাইন পারভেজ ও প্রীতীশ দত্ত রাজ, সরকারী কবি নজরুল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম রানা, পল্টন থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পিয়াল হোসাইন সহ রাজধানীর বিভিন্ন ইউনিটের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আরো অনেকে। মানববন্ধন শেষে বিপ্লবের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়।
চিতলমারীতে তোফায়েল পুত্র বিপ্লবের কুশপুত্তলিকা দাহ, বিক্ষোভ মিছিল
ভোলা-১ আসনের সংসদ সদস্য তোফায়েল আহম্মেদের পুত্র মাইনুল হোসেন বিপ্লবের কুশপুত্তলিকা দাহ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে। বিপ্লব ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। সম্প্রতি কোন এক রাজনৈতিক মঞ্চে তোফায়েল পুত্র বিপ্লব বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীনের পুত্র বাগেরহাট-২ আসনের এমপি শেখ সারহান নাসের তন্ময়কে নিয়ে একটি কটাক্ষ্যমূলক বক্তব্য দেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
বিষয়টি শেখ হেলাল ও শেখ তন্ময়ের অনুসারীদের হৃদয়ে আঘাত দেয়। সেই বক্তব্যের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও কুশপুত্তলিকা দাহ করেছে চিতলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীদের নেতৃবৃন্দ। ২০ ডিসেম্বর রোববার বাগেরহাটের চিতলমারীতে বিকাল ৪টায় চিতলমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয় থেকে মিছিলটি বের হয়।
বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা মোড়ে এসে শেষ হয়। ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল করে উপজেলা মোড়ে বিকাল ৫টায় বিপ্লবের কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয় এবং তার দেওয়া বক্তব্য ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য দাবী জানানো হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চিতলমারী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মো: বাবুল হোসেন খান, সাধারণ সস্পাদক পীযূষ কান্তি রায়, যুবলীগের আহবায়ক শেখ নজরুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক ও ভাইস চেয়ারম্যান মাহাতাবুজ্জামান, ছাত্রলীদের সভাপতি মো: রিয়াদুল ইসলাম রিয়াদ মুন্সী, সহ-সভাপতি গোবিন্দ মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক রবীন হীরা সহ দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
মঈনুল হোসেন বিপ্লবের রাজনীতিতে প্রবেশ যেভাবে:
তিনি বেশিরভাগ সময় দেশের বাহিরে ছিলেন। হঠাৎ করেই ২০১৫ সালের দিকে তার উত্থান ঘটে ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে। সেই সম্মেলনে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদে আসেন। কমিটির এমন কাণ্ড দেখে দলের হাইকমান্ড অনুমোদন দেননি পরে নানা জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ১ বছর পর ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির অনুমোদন দেন।
হঠাৎ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক পদে কিভাবে আসলো এনিয়ে রাজনীতির মাঠ দিনের পর দিন উত্তাল হয়। ছাত্ররাজনীতি নেই, যুবলীগ করেনি, নেই স্বেচ্ছাসেবক লীগেরও কোন পদে।
বিপ্লবের আগমনে আরোও জানাযায়, তিনি এ পদ পেয়েই সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এমপির পুত্র সন্তান পরিচয়ে আলোচনা-সমালোচনায় আসেন, এরপর ভোলার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতেও নানা মত-দ্বিমত তৈরি হয়। থেমে নেই গ্রুপিং লবিং টেন্ডার বাণিজ্য, নদীর চর দখল। একক আধিপত্য বিস্তারেও মহাকাব্য, বিএনপি-জামায়াতের আমলে নির্যাতিত ও ত্যাগী দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক ষড়যন্ত্র মামলারও শেষ নেই। সরেজমিনে ভোলার আদালত পাড়া আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের নেতাদের বাড়িঘরে হামলা নিয়মে পরিণত হয়েছে। সেই সাথে প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি বিরোধী অভিযানেও তার নাম আসে দুর্নীতিবাজদের তালিকায়। যা জাতীয় দৈনিক যুগান্তর পত্রিকাসহ বিভিন্ন জাতীয় ও অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত হয়েছে।
চট্টলানিউজ/এনএ
সম্পাদক ও প্রকাশক : মুহাম্মদ নূরুল আমিন, সম্পাদকীয় কার্যালয়: চরফ্যাশন ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি (সিআইআইটি) রতন প্লাজার তৃতীয় তলা, সদর রোড, চরফ্যাশন, ভোলা।
ঢাকা অফিস: রায়পুরা হাউস (২য় তলা), ৫/এ, আউটার সার্কুলার রোড, পশ্চিম মালিবাগ, ঢাকা-১২১৭ / যোগাযোগ : ০১৭১৬-২৩৭১০৮, ০১৭৬২-৪৪৭২২৮, ইমেইল : chattalanews@gmail.com