ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্রলীগের বিক্ষোভ, আগুন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ১১৪টি কেন্দ্রের সবকটিতে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও সাধারণ ভোটারদের ওপর ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলার অভিযোগ এনে এর বিচার ও দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে জেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে প্রায় আড়াই ঘন্টা প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান, পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল কবির, সহকারী কমিশনার ভূমি কামরুজ্জামান ও সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) জিয়াউল হককে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করার দাবি জানান।

২ এপ্রিল মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এসময় জেলা শহরের প্রধান সড়ক সদর হাসপাতাল রোডের যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে। যান চলাচল বন্ধ থাকে রাস্তার উভয় পাশে । রাস্তায় সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট। বিক্ষোভ সমাবেশের আশপাশ এলাকায় আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য ছাড়াও গোয়েন্দার সংস্থার লোকজন অবস্থান নেয়।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেলের নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সহ-সভাপতি সুজন দত্ত, সাধারণ সম্পাদক শাহাদৎ হোসেন শোভন, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কাজী খায়রুল আলাম, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সদস্য মেহেদী হাসান লেলিন, জেসমিন সুলতানা প্রিয়া, রাহাত হোসেন, শ্রাবন ও আরফিন ফাতেমা প্রমুখ।
বক্তারা অভিযোগ করেন, ‘প্রশাসনের অতি উৎসাহী কর্মকর্তারা টাকার কাছে বিক্রি হয়ে ছাত্রলীগের ওপর হামলা চালিয়েছে। এসপি টাকার নেশায় বুঁদ হয়ে তার বাহিনীকে ছাত্রলীগের পেছনে লেলিয়ে দেয়। বিনা উসকানিতে বিভিন্ন স্থানে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর উদ্দেশ্যমূলক ভাবে হামলা চালানো হয়। এর নেতৃত্বে ছিলেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল কবির ও সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: কামরুজ্জামান। ভোটকেন্দ্র ও আশপাশের এলাকায় নৌকার ব্যাজ পড়া যাকে পেয়েছে তাকেই পেটানো হয়েছে।’

বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নান, জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ দৌলা খান, জেলা পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন খান, সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল কবির, সদর এসিল্যান্ড মো: কামরুজ্জামান, জেলা সদর থানার ওসি তদন্ত জিয়াউল হককে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রত্যাহারের দাবী জানান। পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে যদি বিভাগীয় ব্যবস্থা না নেয়া হয় তাহলে ছাত্রলীগ তাদের বিচারের ব্যবস্থা করবে। অন্যথায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সাথে সারাদেশের সড়ক ও রেলপথ যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

এছাড়াও বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল মান্নানের সাথে যোগসাজস করে নির্বাচনে বিতর্কিত ভূমিকার কারণে প্রেসক্লাবের দুই সাংবাদিকের শাস্তি দাবি করেন বিক্ষুব্দ ছাত্রলীগ নেতারা। ছাত্রলীগ নেতারা আরো বলেন, ‘অভিযোগ রয়েছে, নির্বাচনের আগের রাতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার আবদুল মান্নান রহস্যজনক কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আসেন। তিনি ওইদিন রাতে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী ফিরোজুর রহমান ওলিও এবং পুরুষ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী লোকমান হোসেন ও শামীমা আক্তারের সাথে গোপনে বৈঠক করেন। পরদিন নির্বাচনে প্রশাসন সম্পূর্ণ তাদের পক্ষে কাজ করে এবং প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ঢুকে বিভাগীয় কমিশনারের দেয়া নির্দেশনামতো আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের ভোটের লাইনে, কেন্দ্রের বাইরে এমনকি বাড়িঘরে ঢুকে মারধর করে। এতে সম্পূর্ণরূপে মাঠ ছাড়া হয়ে যায় আওয়ামী লীগ। স্বতন্ত্র প্রার্থী জয়ী হয়। বিভাগীয় কমিশনার চট্টগ্রাম থেকে তার সাথে ১১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে আসেন।’