ফসলি জমিতে ইটভাটা জনস্বাস্থ্য-পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে প্রভাবশালীরা সরকারী বিধি লংঘন করে অবৈধ ভাবে সাদিপুর গ্রামে ফসলি জমিতে ৪ টি ইটভাটা গড়ে তুলেছে। ফলে, মারাত্মক পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি এই গ্রামের জনস্বাস্থ্য চরম ঝুকির মধ্যে পড়েছে। এলাকাবাসী এসকল ইটভাটা উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসক সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছে।

সূত্রে জানা জানা গেছে, উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সাদিপুর, স্বরুপপুর, দৌলতপুর হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায়, দৌলতপুর কলেজ ও দাখিল মাদ্রাসার পাশে, চক দৌলতপুর নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পিছনে, দৌলতপুর থানার পুর্বপাশে খাস জমিতে, গলাকাটি মোড়ে, বড়গাদিয়ায়, জয়রামপুরে ও ডাংমড়কায় কুষ্টিয়া প্রাগপুর এসব এলাকায় তিন ফসলি জমিতে অবৈধভাবে একাধিক ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। ফলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিপর্যয়ের সাথে সাথে আবাদি জমির পরিমান কমে যাচ্ছে।

সূত্রে আরও জানা যায়, এ সকল ইটভাটায় অবাধে কাঠ পোড়ানোর ফলে একদিকে পরিবেশ মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়েছে অন্যদিকে জনবসতি এলাকায় অসংখ্য ইটভাটার ফলে সাধারণ মানুষ শ্বাসকষ্ট সহ নানা ধরণের চর্মরোগে আক্রান্ত হচ্ছে।

দৌলতপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রের টিএইচএ ডাঃ অরবিন্দ পাল জানান, দীর্ঘদিন ইটভাটার ধোয়া বাতাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করায় শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি ও নানা ধরণের চর্মরোগে আক্রান্ত হবে। এলাকাবাসী জানায়, ইটভাটাগুলোর অধিকাংশের লাইসেন্স না থাকলেও পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়া অজ্ঞাত কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি।

এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান জানান, কোনো ইটভাটা মালিক পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেয়নি। ইটভাপার মালিকেরা শুধুমাত্র বছরে দেড় থেকে আড়াই লক্ষ টাকা কাষ্টমস্ অফিসে জমা দিয়ে এবং জেলা প্রশাসকের এলআর ফান্ডে কিছু চাঁদা প্রদান করে ইটভাটায় ইট পোড়াচ্ছে। আবাদি জমি নষ্ট করে আবাসিক এলাকায় ইটভাটা স্থাপনের কারণে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কায় রয়েছে বলে তিনি জানান।

ইটভাটায় প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক ও ট্রলিতে করে ইট, মাটি, বালি ও খড়ি বহনের ফলে রাস্তাঘাট ভেঙ্গে বেহাল হয়ে গেছে। এসব যানবাহন চলাচলের সময় রাস্তায় ব্যাপক ধুলাবালু উড়ে। এতে সাধারণ মানুষসহ স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা চরম ভোগান্তির পোহাচ্ছে। এসব যানবাহনে মাটি বহন করায় রাস্তায় মাটি পড়ে স্তরে পরিণত হয়েছে। ফলে মাঝে মধ্যেই সড়ক দূর্ঘটনাও ঘটছে। এসব এলাকায় বসবাসকারীদের জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। ফলে এলাকাবাসী জনবহুল এলাকা ও ফসলি জমিতে ইটভাটা বন্ধের জন্য জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগ করেছে।

এ ব্যাপারে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তৌফিকুর রহমান জানান, জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সব খবর/কুষ্টিয়া/দৌলতপুর/৩ মার্চ ২০১৮/সোহেল