প্রেমিক যুগলকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ইবি সিকিউরিটি গার্ডের বাণিজ্য!

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বহিরাগত দুই শিক্ষার্থীকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে টাকার চুক্তি করেছে দায়িত্বরত তিন সিকিউরিটি অফিসার। বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় কেন্দ্রীয় মসজিদের নিচে অবস্থিত আনসার ক্যাম্পে তাদের মুসলেকা নেন ইবি সিকিউরিটি অফিসার রুপম। এসময় রুপম, তার সাথে থাকা আনসার কমান্ডার মনিরুল ও সিকিউরিটি ইনচার্জ আসলামের সাথে ৩ হাজার টাকার চুক্তি হয়।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, বিকাল সাড়ে ৪টায় ক্যাম্পাসের পশ্চিমপাড়ায় মেয়েদের হল সংলগ্ন পেয়ারাতলায় আপত্তিকর অবস্থায় দেখা যায় বহিরাগত জসিম ও রেহানাকে (ছদ্মনাম)। এসময় ছাত্রলীগের সাবেক বনবিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জুয়েল রানা হালিমের কর্মী জুবাইর ও তার ২ সহযোগী রাষ্ট্রজ্ঞিান বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের নুরুজ্জামান সাগর ও ইংরেজী বিভাগের একই সেশনের শিক্ষার্থী রাব্বী তাদের হাতে নাতে ধরে। এময় জুবাইর ও তার সহযোগীরা তাকে ২-৩ টি চড় থাপ্পড় এবং ৫০০ টাকা নিয়েছে বলে জানিয়েছে জসিম। এরপর ঘটনাস্থলে সিকিউরিটি ইনচার্জ আসলাম হাজির হয়। এসময় জুবাইর তাদেকে আসলামের হাতে তুলে দেয়।
এ ঘটনার পর সিকিউরিটি ইনচার্জ আসলাম তাদেরকে কেন্দ্রীয় মসজিদের নিচে অবস্থিত আনসার ক্যাম্পে নিয়ে যায়। আনসার ক্যাম্পে সিকিউরিটি অফিসার রুপম তাদের কাছ থেকে লিখিত আকারে একটি মুসলেকা নেন। একই সাথে রুপমের ইশারায় জসিমের সাথে বিকাশ নম্বরের মাধ্যমে ৩০০০ হাজার টাকার চুক্তি করে সিকিউরিটি ইনচার্জ আসলাম ও আনসার কমান্ডার মনিরুল।
এঘটনা সাংবাদিকরা জানতে পারলে জসিমকে ও ওই মেয়েকে সোজা মেইন গেটের বাইরে যেতে বলা হয়। মেইন গেটে আসার সময় সাংবাদিকদের সাথে জসিমের কথা হয়। সাগর ঘটনাস্থল থেকে তাদের ছবি তুলেছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছে জসিম। এসময় জসিম ছবিগুলো যাতে ডিলেট করা হয় এ আকুতি জানায় সাংবাদিকদের কাছে।
জসিমের কাছে টাকা না থাকায় ইবি’র সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাহবুবকে বিকাশে টাকা পাঠতে বলে। জসিমের পারিবারিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় ৩ হাজারের পরিবর্তে ১৪৫০ টাকা ক্যাশ আউট করে। টাকা নিয়ে আনসার কমান্ডার মনিরুলের হাতে টাকা দিতে যায় জসিম। কিন্তু সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে টাকা নিতে অস্বীকার করে মনিরুল। এসময় মনিরুলকে জসিম কেন টাকা দিচ্ছিল তা জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করেন এবং বলেন আমি ওকে চিনি না, আমার সাথে কোন চুক্তি হয়নি।
এসময় ইবি’র সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাহবুব ঘটনাস্থলে হাজির হন এবং তিনি বলেন, ‘আমি এক আত্মীয়ের কথা মত জসিমকে বিকাশে টাকা পাঠিয়েছি। তিনি জসিমকে বলেন কে তোকে টাকা দিতে বলছে নাম বল।’ এসময় সে ভয়ে উপস্থিত কারও নাম না বললেও পরে সাংবাদিকদেরে কাছে রুপম, মনিরুল ও আসলামের কথা স্বীকার করেছে। পরে মাহবুব জসীমকে ঘটনাস্থল থেকে নিয়ে যায়।
কোন টাকা নিয়েছে কিনা জানতে চাইলে জুবাইর বলেন, ‘এটা আসলে ভুয়া কথা। আমরা কোন টাকা নেয়নি। ক্যাম্পাসে বহিরাগতরা অশ্লীলতা করছিল আমরা তার প্রতিবাদ করেছি।’
সিকিউরিটি অফিসারদের সাথে টাকার কোন চুক্তি হয়েছে কিনা জানতে চাইলে রুপম বলেন, ‘ছাত্রলীগের সাথে ৩০০০ টাকার চুক্তি হয়েছিল। কিন্তু ওই ছেলে ভুল করে সিকিউরিটি অফিসারের কাছে টাকা দিতে চাচ্ছিল।’

এ বিষয়ে প্রক্টর প্রফেসর ড. মো: মাহবুবর রহমান বলেন, পুরো ক্যাম্পাস সিসি ক্যামেরা দ্বারা ভিডিও হচ্ছে। আমি অভিযোগটি সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করব। যদি কোন অপরাধ সংগঠিত হয় অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।’