দেবর-ভাবির পরকীয়া: স্বামী হত্যায় বাজেট ১ লাখ

রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুল এলাকায় মনিরুজ্জামান মনির ওরফে মনু হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনের দাবি করেছে পুলিশ। এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে দেবর-ভাবির পরকীয়াকে দায়ী করেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

পুলিশ জানায়, মনিরের স্ত্রী কাজল রেখা ও তার আপন ছোট ভাই আজমল হক মিন্টুর মধ্যে দীর্ঘদিন অবৈধ সম্পর্ক ছিল। তাদের পরকীয়ায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মনির। এজন্য পথের কাটা সরিয়ে দিতে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন কাজল ও মিন্টু। কিলিং মিশন সফল করতে তারা ঢাকার পেশাদার তিন খুনিকে ভাড়া করেন।

শনিবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) এসএম মোস্তাক আহমেদ খান নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, মামলার তদন্ত করতে গিয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাড্ডা থানা পুলিশ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন করেছে। সেই সঙ্গে এই হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী নিহত মনিরের স্ত্রী কাজল রেখাকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়েছে।

গুলশানের ডিসি বলেন, গ্রেফতারের পর কাজল রেখা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যার পরিকল্পনাকারী মিন্টু ও তিন ভাড়াটে খুনি আব্দুল মান্নান, সোহাগ ওরফে শাওন ও ফাহিমকে গ্রেফতার করে বাড্ডা থানা পুলিশ।

তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ২টি সুইচ গিয়ার চাকু ও মনিরের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

স্বামী হত্যায় বাজেট ১ লাখ টাকা
ডিসি মোস্তাক আহমেদ বলেন, মনিরের স্ত্রী কাজল রেখার সঙ্গে মনিরের আপন ছোট ভাই আজমল হক মিন্টুর ৮/৯ বছর যাবৎ পরকীয়া চলছিল। তাদের এই সম্পর্ক স্থায়ী করতে একমাত্র পথের কাটা স্বামী মনিরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন কাজল ও মিন্টু।

হত্যার পরিকল্পনা হিসেবে তারা ১ লাখ টাকার চুক্তিতে ঢাকার তিন পেশাদার খুনিকে ভাড়া করেন। অগ্রিম হিসেবে তাদের ৩০ হাজার টাকা দেয়া হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভাড়াটে খুনিরা মনিরকে হত্যা করে। পরে পরিকল্পিতভাবে খুনের দায় এড়ানোর জন্য আজমল হক মিন্টু নিজেই বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

উল্লেখ্য, গত ৮ সেপ্টেম্বর সকাল পৌনে ৮টার দিকে বাড্ডার সাতারকুলের ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পশ্চিম দিকে হিন্দুপাড়ার খোলা মাঠে গলা কাটা এবং পেটে ছুরিকাঘাত করা একটি অজ্ঞাতনামা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে মৃতের আত্মীয় স্বজন ও ছোট ভাই আজমল হক মিন্টু ঢামেকে গিয়ে লাশ সনাক্ত করেন।