ড. কামালের প্রতি অন্ধ বিশ্বাসে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে: মওদুদ

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের ওপর অন্ধ বিশ্বাসে বিএনপি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত মতবিনিময় সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেয়ার তিনটি কারণ উল্লেখ করে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘একটা বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনে গিয়েছি। যদি না যেতাম তাহলে আপনারাই বলতেন, না গিয়ে ভুল করেছেন। আরেকটি কারণ হলো, নির্বাচনে গেলে আমাদের নেতাকর্মীরা বের হয়ে আসতে পারবে। মানুষের কাছে যেতে পারবে। আরেকটা কারণ ছিল ড. কামাল হোসনের ওপর অন্ধ বিশ্বাস ছিল। নির্বাচনে এতোটা খারাপ অবস্থা হবে তা ধারণায় ছিল না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের একজন প্রার্থীকেও ৯০ ভাগ সুষ্ঠুভাবে প্রচারণা চালাতে দেয়া হয়নি। প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের বাড়ির পাশে বোমা ফাটিয়েছে, ভয়ভীতি ছড়িয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে, যেন তারা ভোটকেন্দ্রে না যায়। গেলে বাড়ি জ্বালিয়ে দেবে, ছেলেদের জেলে পাঠাবে।’

‘এ নির্বাচনে সরকার পুলিশকে ক্যাশ টাকা দিয়েছে। আগে আমরা প্রার্থীরা ক্যাশ টাকা দিতাম। কিন্তু সরকার যে ক্যাশ টাকা দেয়, সেটা আগে জানা ছিল না। এটা হাতে কলমে প্রমাণ করা যাবে না। তবে কথাগুলো শতভাগ সত্য’, বলেন বিএনপির এ নীতি নির্ধারণী ফোরামের সদস্য।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মওদুদ আহমদ বলেন, ‘তিনি (খালেদা জিয়া) হাঁটতে একেবারেই পারেন না। দুই হাতেই ব্যথা। শরীরের অবস্থা আগের চেয়ে অনেক খারাপ।’ তিনি বলেন, ‘সরকার যে ফর্মুলা করেছে এখান থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব না। যতদিন সম্ভব না হবে ততদিন দেশে সভ্যতা ফিরে আসবে না।’

মওদুদ বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলন আরও বেগবান করতে হবে। আর এ আন্দোলন সফল করার জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ আইনজীবী নেতা ও বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে মওদুদ বলেন, ‘আন্দোলন বললেই আন্দোলন হবে না। সারাদেশে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যাদের মা-বোনদের ধর্ষণ করেছে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। পুনর্বাসন করতে হবে। তাহলে তারা আপনাদের জন্য বা খালেদা জিয়ার জন্য আন্দোলন করবে।’

আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সুব্রত চৌধুরী, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, জগলুল হায়দার আফ্রিক, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ।