কোনো তরুণ বেকার থাকবে না: প্রধানমন্ত্রী

দেশের কোনো তরুণ বেকার থাকবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, ‘কোনো তরুণ বেকার থাকবে না। বেকারত্ব দূর করতে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।’ বুধবার গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কয়েকটি অর্থনৈতিক অঞ্চল ও শিল্প কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর কাজের উদ্বোধনের সময় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। ভিডিও কনফারেন্সে ১১টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের উদ্বোধন, ১৩টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে ১৬টি বাণিজ্যিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন কার্যক্রম, ২০টি শিল্প কারখানার ভিত্তিস্থাপন ও পাঁচটি চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান। শেখ হাসিনা বলেন, দেশে অনেক বিদেশি বিনিয়োগ আসছে, যার মূল লক্ষ্য কর্মসংস্থান।

অনুষ্ঠানে শিল্পায়নের ক্ষেত্রে ফসলি জমি নষ্ট না করার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, আমাদের জমির স্বল্পতা আছে। আমাদের খাদ্য উৎপাদন করতে হবে। কৃষি জমি বাঁচাতে হবে। ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না। ফসলি জমি আমি নেবো না। আমাদের শিল্পায়ন যেমন দরকার তেমন-ই কৃষি জমিও লাগবে। মিরসরাই ইকোনমিক জোন চরাঞ্চলে হচ্ছে। সেখানে কোনো ফসলি জমি নেয়া হয়নি। ভবিষ্যতেও কোনো কার্যক্রমে ফসলি জমি নষ্ট করা যাবে না।

শিল্পায়ন ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কৃষির পাশাপাশি শিল্পায়ন একান্তভাবে প্রয়োজন। শিল্পায়ন ছাড়া একটা দেশ কখনো উন্নয়ন হয় না। আমাদের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। কিন্তু সেই কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে কৃষি আমাদের প্রয়োজন। সেই সঙ্গে আমাদের শিল্পায়নও প্রয়োজন। সে কথা চিন্তা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা সারা বাংলাদেশে ১০০টা বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলব। যেখানে দেশি-বিদেশি সব ধরনের বিনিয়োগ হবে।’
‘শিল্পায়ন কোথায় হবে, কীভাবে হবে সেই জায়গা আমরা ঠিক করে দেব। যত্রতত্র আমার কৃষিজমি নষ্ট হবে না। তিন ফসলের জমি সেগুলো নষ্ট হবে না। আমরা গবেষণা করে করে আমাদের খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো শুরু করেছি। বাংলাদেশকে আমাদের ক্ষুধামুক্ত করতে হবে, দারিদ্র্যমুক্ত করতে হবে। খাদ্য উৎপাদন আমাদের বাড়াতে হবে। পাশাপাশি আমাদের দেশটা যেকোনো সময় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়, এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে অনেক সময় আমাদের ফসল নষ্ট হয়।’
জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ফসলি জমি নষ্ট হচ্ছে কি-না এ বিষয়ে নজর দিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্তরা যেন দ্রুত অর্থ ও বিকল্প জমি পায় তা নিশ্চিতের নির্দেশ দেন সরকারপ্রধান। বলেন, যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাদের জমির তিনগুন দাম দেয়া হচ্ছে। আর তারা টাকা তো পাবে-ই তাদের বিকল্প জায়গার ব্যবস্থাও করতে হবে সংশ্লিষ্টদের। পাশাপাশি তাদের ছেলেমেয়েকে ওইসব ইকোনমিক জোনের কোম্পানি-কারখানায় চাকরি দেয়ার ক্ষেত্রেও অগ্রাধিকার দেয়ার অনুরোধ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে রমজানে চিনি ও তেলসহ খাদ্যপণ্যের দাম যেন না বাড়ে সেদিকে নজর দিতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান সরকারপ্রধান। সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগুলো দেশকে উন্নত করা সম্ভব মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার। সুষ্ঠু পরিকল্পনায় অর্থনৈতিক উন্নয়ন যে সম্ভব আজ তা প্রমাণিত।