চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের ৬০ ঘণ্টা পর এখনো থেমে থেমে আগুন জ্বলছে। জ্বলতে থাকা কনটেইনারগুলোর ওপর দিয়ে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে। ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা কনটেইনারগুলোর ওপর পানি ছিটিয়ে চলেছেন।
ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আজ মঙ্গলবার জানান, এখনো ২৮টি কনটেইনারের মধ্যে তাঁরা অনবরত পানি ছিটিয়ে চলেছেন। ২৮টি কনটেইনারের ভেতরে থেমে থেমে আগুন জ্বলছে। উত্তপ্ত হয়ে আছে কনটেইনারগুলো। এর মধ্যে রাসায়নিক ভর্তি কনটেইনারও আছে। তবে সেগুলো এখনো চিহ্নিত করা যায়নি। জ্বলতে থাকা যেসব কনটেইনারে রপ্তানি পোশাক পণ্য আছে বলে তাঁরা মনে করছেন, সেগুলোর দরজা খুলে ভেতরে থাকা পণ্যের আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। কিন্তু এখনো ঝুঁকিপূর্ণ ১২টি রাসায়নিক ভর্তি কনটেইনার শনাক্ত করতে না পারার কারণে তাঁদের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হচ্ছে।
গত শনিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপো লোডিং স্টেশন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এর দেড় ঘণ্টা পর একটি কনটেইনারে থাকা রাসায়নিক বিস্ফোরিত হয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৯ সদস্যসহ মোট ৪১ জন নিহত হন। আহত হয়েছেন আড়াই শতাধিক মানুষ।
জানা যায়, মূল ফটক থেকে দেড় শ মিটার দক্ষিণে স্তূপ করে রাখা কনটেইনারে আগুন জ্বলছে। সেখানে অনবরত পানি ছিটিয়ে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। জ্বলন্ত কনটেইনারগুলোর উত্তর পাশে একটি কনটেইনার পুরোপুরি ধ্বংস হলেও ভেতরে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। চারদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে রাতে নেভানো কনটেইনারে থাকা গার্মেন্টস পণ্য।
ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে আগুন নেভানোর কাজ করার সময় কনটেইনারগুলোর ভেতর থেকে নীল রঙের ছোট কেমিক্যাল ভর্তি কনটেইনার বিস্ফোরিত হয়ে তাঁদের গায়ের কাছে পড়ে। এতে তাঁরা ভীত হয়ে যান।
ফায়ার সার্ভিস সূত্র জানিয়েছে, সবশেষ তাদের ৬টি ইউনিটের ৫০ জন সদস্য কাজ করছেন আগুন নির্বাপণে। ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন বলেন, রাতভর তাঁরা কাজ চালিয়ে গেছেন। ভোর রাতের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল। কিন্তু কনটেইনারগুলো উত্তপ্ত থাকায় ভেতরে থাকা রপ্তানি পণ্য থেকে আবারও আগুন জ্বলে ওঠে। তাঁরা চেষ্টা করছেন, প্রতিটি কনটেইনারের পেছনের দরজার লক ভেঙে দরজাটি খুলতে এবং দরজা খোলার পর জ্বলন্ত পণ্যের ওপর পানি ছিটিয়ে দ্রুত আগুন নির্বাপণে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এখনো ভেতরে জ্বলন্ত কনটেইনারগুলোর মধ্যে রাসায়নিকের কনটেইনার আছে। যেগুলো তাঁরা চিহ্নিত করতে পারেননি। এ কারণে তাঁদের খুব সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হচ্ছে।