খেলাধুলা ডেস্ক : ‘শুভ জন্মদিন মিয়া’- সাকিব আল হাসানকে ঠিক এভাবেই জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএলের) দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। আর সাথে লিখে দিয়েছে, দ্রুত ঘরে আসো।’
আজ সাকিবের জন্মদিন।৩১ বছরে পা দিলেন তিনি। শুভ জন্মদিন বাংলাদেশের সুপারস্টার।
মুদ্রার যেমন দুপিঠ থাকে ঠিক তেমনি সাকিব নিজ জীবনেও পেয়েছেন দুই ধরণের অভিজ্ঞতা। মানুষের ভালোবাসা তাকে নিয়ে গেছে উন্নতির চরম শেখরে। আবার তাকে ঘিরে তর্ক-বিতর্ক, রোগ-ক্ষোভেরও কমতি নেই।
তবে একটি বিন্দুতে সাকিব সবাইকে এক করেছেন। তা হলো, বাংলাদেশের ব্রান্ড নেইম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তৈরি করেছেন এবং তা প্রতিষ্ঠিত করেছেন। যেখানেই গিয়েছেন সেখানেই পেয়েছেন সাফল্য। তার তার সাফল্যের হাত ধরে বাংলাদেশ পেয়েছে বড় সম্মান। শুধু যে ক্রিকেট তাও নয় সাকিব পুরো বাংলাদেশকে দিয়েছেন সম্মান, গৌরব।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রাণভোমরা সাকিব। ১৯৮৭ সালের ২৪ মার্চ মাগুরার একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মাশরুর রেজা খুলনা বিভাগের হয়ে ফুটবল খেলেছেন। আর এক ফুফাতো ভাই খেলেছেন বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে। এরকম ফুটবল পাগল পরিবারেই বড় হয়েছেন সাকিব আল হাসান। বাবাও চাইতেন পড়াশোনার পাশাপাশি ছেলে ফুটবল খেলুক। কিন্তু তরুণ বয়স থেকেই ফুটবল থেকে ক্রিকেট ভাল খেলতেন। গ্রামে গ্রামে ভাড়ায় ক্রিকেট খেলতেন সাকিব।
এই রকম এক ভাড়ায় খেলতে যাওয়া ম্যাচে দারুন পারফরম্যান্সে সাকিব এক আম্পায়ারকে অভিভূত করেছিলেন। পরবর্তীতে ওই আম্পায়ারই সাকিবকে ইসলামপুর পাড়া ক্লাবের ( মাগুরা ক্রিকেট লীগের একটি দল) সঙ্গে অনুশীলন করার সুযোগ করে দেন। সাকিব তার স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক ব্যাটিং ও দ্রুতগতির বোলিং অব্যাহত রাখেন, সেই সাথে প্রথমবারের মত স্পিন বোলিং নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সফল হন। ফলস্বরূপ, ইসলামপুর দলে খেলার সুযোগ পান এবং ওই ক্লাবে নিজের অভিষেক ম্যাচের প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেন।
সেই থেকে শুরু। তারপর লম্বা একটা পথ পাড়ি দিয়ে আজকের অবস্থানে। বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (বিকেএসপি) প্রাক্তন শিক্ষার্থী সাকিব। ২০০৫ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ ও ২০০৬ সালে জাতীয় দলে ডাক পান। অনেক চড়াই উতরাই পেরিয়ে সাকিব এখন বাংলাদেশ দলের মূল কাণ্ডারি।
২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে দলে অভিষেক হয় সাকিব আল হাসানের। পরের বছর ভারতের বিপক্ষে ডাক পান বাংলাদেশ টেস্ট দলে। এরপর থেকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি দেশসেরা এ অলরাউন্ডারকে। ব্যাট ও বল হাতে সমান তালে বাংলাদেশ দলকে দিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি তিন ফরম্যাটেই হয়েছেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার। অনেক অর্জনের কথা বলা যাবে সাকিব আল হাসানের। সোজাসাপ্টা কথা বলেন বলে নিন্দুকের আঘাতও সহ্য করেছেন অনেকবার। কিন্তু সাকিব আল হাসান যেন সাকিব আল হাসানই।
নিজেকে শুনেন, নিজেকে বুঝেন তিনি। নিজের মতো করে খেলেন। ক্যারিয়ারে খারাপ সময় আসবে, ভাল সময় আসবে। কিন্তু সব সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখাটাই বড় কথা। যিনি সাকিবকে এশিয়া কাপে হারার পর মাঠের মধ্যে কাঁদতে দেখেছেন তার কাছে সাকিবের ডেডিক্যাশন নিয়ে প্রশ্ন থাকার কথা না। পুরো বিশ্বে সাকিব একটাই, এবং বিশ্বেসেরা অলারউন্ডার সাকিব কিন্তু বাংলাদেশের। সত্যি এটা আমাদের বড় পাওয়া।
আজ জন্মদিন হলেও ভক্তদের সঙ্গে গতকালই জন্মদিন উদযাপন করেছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। আজ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকবেন তিনি। তাই একদিন আগেই সমর্থকদের সময় দিয়েছেন। সুপারস্টারের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলও (আইসিসি)।