বিশ্বের যে কোনো দেশে কোভিড ১৯-এর ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের সঙ্গে সঙ্গে তা দেশে আনতে প্রয়োজনে নগদ টাকা দিয়ে কিনবে সরকার। দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে প্রায় আট হাজার কোটি টাকা লাগতে পারে বলে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়কে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এদিকে সরকার ভ্যাকসিন বিষয়ে তথ্য জানতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন ও রাশিয়ার কাছে চিঠি দিয়েছে। তবে কারও কাছ থেকে জবাব এখনো পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে দেশের জনসংখ্যার ২০ শতাংশের জন্য বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। তবে তা পেতে দেরি হতে পারে। এ জন্য সরকার ভ্যাকসিন কিনতে আগ্রহী। এ নিয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এখন পর্যন্ত যে হিসাব পাওয়া গেছে তাতে দেশের সব মানুষের জন্য ভ্যাকসিন কিনতে আট হাজার কোটি টাকার মতো লাগতে পারে। করোনা সংক্রান্ত জরুরি প্রয়োজন মেটাতে যে ১০ হাজার কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রাখা হয়েছে, সেই টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন কেনার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য করোনার টিকা নিশ্চিত করতে ১৩টি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একটি সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। বিশ্বের কোন দেশ থেকে কোন প্রক্রিয়ায় ভ্যাকসিন আনা হবে তা নিয়ে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সময়মতো অর্থ সরবরাহে কাজ শুরু করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। কোন দেশের টিকা অধিক কার্যকর ও সহজলভ্য হবে সেটি জানতে কাজ করছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে ভ্যাকসিন নাগরিকদের বিনামূল্যে দেওয়া হবে না মূল্য ধার্য করা হবে এবং কারা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন পাবে সে বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। ভ্যাকসিন আসার আগেই এ বিষয়ে গাইডলাইন দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
ভ্যাকসিনগুলোকে অবশ্যই অন্য ওষুধের তুলনায় উচ্চতর সুরক্ষা মান অনুসরণ করতে হবে। কারণ সেগুলো লাখ লাখ মানুষকে দেওয়া হবে। সম্প্রতি কোভিড-১৯ সংক্রান্ত এক সভায় ভ্যাকসিন সংগ্রহের বিষয়ে স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান বলেন, একটি ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য ব্যয় হতে পারে ৪০ ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় তিন হাজার ৪০০ টাকা।
এর আগে গত সোমবার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক সভায় বলেন, মহামারী থেকে মানুষকে বাঁচাতে যেখান থেকেই হোক, সম্ভাব্য দ্রুত সময়ে ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য যোগাযোগ অব্যাহত আছে। বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে ভ্যাকসিন উৎপাদনে অ্যাডভান্স স্টেজে রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং চীনের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ভ্যাকসিন গবেষণার উন্নত পর্যায়ে রয়েছে। রাশিয়াও ভ্যাকসিনে সাফল্যের দাবি করেছে। আমরা সব দিকেই নজর রাখছি।