ঢাকা অফিস : চলতি বছরে বন্যায় ৩৩ জেলায় নিহত হয়েছেন ২৫১ জন। আবার নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ হাজারের বেশি মানুষ। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত ৫৫ লাখ মানুষ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম শনিবার (২৯ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছে।
চলতি মৌসুমে তিন দফা বন্যায় দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বন্যার কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকায় পানি কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগেরও দেখা দিচ্ছে।
গত ৩০ জুন থেকে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত ৩৩ জেলার বিভিন্ন এলাকায় ডায়রিয়া, আরটিআই, চর্মরোগ, চোখের প্রদাহ, সাপে কাটা, পানিতে ডোবা, বন্যা জনিত কারণে যেকোনো আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ও শ্বাসনালীর প্রদাহসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ হাজার ১৯৬ জন। এছাড়া পানিতে ডুবে, ডায়রিয়ায়, সাপের কামড়ে, বজ্রপাতসহ অন্যান্য কারণে ২৫১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে; ২১০ জন। সাপে কাটায় মারা গেছেন ২৫ জন। এছাড়া বজ্রপাতে ১৩ জন মারা গেছেন। বাকিরা অন্যান্য কারণে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও স্বাস্থ্য তথ্য ইউনিটের (এমআইএস) ডেপুটি চিফ (মেডিক্যাল) ডা. এবি মো. শামছুজ্জামান জানিয়েছেন, দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলের ৩৩ জেলার নিম্নাঞ্চলে প্রায় ৫৫ লাখ মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।
বন্যা কবলিত জেলাগুলোর মধ্যে ডায়রিয়া, আরটিআই, চর্মরোগ, চোখের প্রদাহ, সাপে কাটা, পানিতে ডোবা ও বন্যা জনিত কারণে যেকোনো আঘাত প্রাপ্ত হয়ে ও শ্বাসনালীর প্রদাহসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিচ্ছে।
এসব রোগে মাদারীপুরে সবচেয়ে বেশি মানুষ নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এ জেলায় আক্রান্ত সংখ্যা ৩৪ হাজার ৩৭২ জন।
সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে টাঙ্গাইলে; ৪১ জন। আর জামালপুরে ৩২ জন মারা গেছেন।
অধিদপ্তরের হিসেব অনুযায়ী, বন্যা দুর্গত এলাকায় বিভিন্ন রোগের মধ্যে এ পর্যন্ত ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়েছেন ২৪ হাজার ১৪৪ জন। চর্মরোগে ১৭ হাজার ১৭৮ জন। এছাড়া আরটিআইএ আট হাজার ৬১১ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বাকিরা অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
বন্যা দুর্গত ৩৩ জেলায় সাধারণ মানুষের আশ্রয়ের জন্য আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে এক হাজার ৭০টি। এসব এলাকায় দুর্গত মানুষের চিকিৎসার জন্য দুই হাজার ৭৮৫টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।
এছাড়া সিভিল সার্জন, স্থানীয় প্রশাসন জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সব সময় তদারকি করছেন। সরকারের সব মন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে বন্যা পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পর্যাপ্ত বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও অন্যান্য ওষুধ বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া আক্রান্তদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে।