এলোপাতাড়ি গুলি করে নিরীহ উপজাতীয়দের হত্যার ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে গেলে ভারতের বিরোধীদলীয় নেতা প্রিয়াংকা গান্ধী ভদ্রকে শুক্রবার আটক করেছে পুলিশ। উত্তর প্রদেশের সনভান্দ্র জেলার যে গ্রামটিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সেখানে যাওয়ার পথে প্রথমে তাকে থামিয়ে দেয়া হয়। পরে সেখানে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে গেলে সরকারি গাড়িতে করে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।
চলতি সপ্তাহে গ্রামটিতে ভূমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গুলি করে স্থানীয় ১০ উপজাতীকে হত্যা করা হয়েছে।-খবর বিজনেস টুডের
প্রদেশটির কংগ্রেস প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন প্রিয়াংকা। তাকে শুক্রবার সনভান্দ্র জেলার কাছে মির্জাপুরের একটি রাস্তায় বসে প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে। এসময় কংগ্রেস কর্মীরা তার সঙ্গে ছিলেন। নিরাপত্তা কর্মীরা তাদের ঘিরে রেখেছিল।
প্রিয়াংকা বলেন, আমি কেবল আক্রান্ত পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করতে চাই। তাদের স্বজনদের নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমার ছেলের বয়সী একটি শিশু গুলিবিদ্ধ হয়েছে। সে এখন হাসপাতালে বেডে কাতরাচ্ছে।
‘কেন আমাকে যাত্রাপথে থামিয়ে দেয়া হয়েছে, তা বলতে হবে,’ দাবি করলেন প্রিয়াংকা। লোকসভা নির্বাচনের পর ৪৭ বছর বয়সী এই কংগ্রেস নেত্রীর উত্তর প্রদেশে এটি দ্বিতীয় সফর।
শুক্রবার তিনি নরেন্দ্র মোদির আসন বারানসির হাসপাতালে গিয়ে আহতদের দেখে আসেন। পরে তিনি সনভান্দ্র জেলার পথে রওনা দেন।
গান্ধী পরিবারের এই সন্তান বলেন, আমি শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়েছি। এখানে লোক জড়ো হওয়া নিষিদ্ধ এমন কোনো নির্দেশনা আমাকে কেউ দেখাতে পারবে।
এরপর যখন তাকে সরকারি গাড়িতে তুলে নেয়া হচ্ছিল, তখন তিনি বলেন, আমি জানি না, তারা আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে। এখন যেকোনো জায়গায় যেতে আমি রাজি আছি।
৩৬ একর জমি নিয়ে ওই বিরোধের জেরে বুধবার ১০ জনকে গুলি করে হত্যা করে গ্রামপ্রধান ইয়াগি দত্ত ও তার সহযোগিরা। কয়েক প্রজন্ম ধরে বসবাস করা ভূমি দখলদারদের ছেড়ে দিতে তারা রাজি ছিলেন বলে গুলি করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ইয়াগি দত্ত ৩২টি ট্রাক্টরে করে ২০০ লোক নিয়ে আসেন জমি দখল করতে। কিন্তু স্থানীয় উপজাতীয়রা নিজেদের ভূমি ছাড়তে অস্বীকার করেন। তখন গ্রামপ্রধানের লোকজন আধঘণ্টা ধরে তাদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি করতে থাকেন।
এতে ভারতের সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় একটি অভিজাত পরিবারের কাছ থেকে বছর দশেক আগে ওই ভূমি কেনার দাবি করে হত্যাকারী ইয়াগি। এদিকে বোনকে আটকের নিন্দা জানিয়েছেন কংগ্রেসের বিদায়ী সভাপতি রাহুল গান্ধী।