দ. আফ্রিকার বিপক্ষে বাংলাদেশের দাপুটে জয়ের ৫ কারণ

বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। রোববার লন্ডনের বিখ্যাত ভেন্যু দি ওভালে টস জিতে টাইগারদের ব্যাট করতে পাঠান প্রোটিয়ারা। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৩৩০ রান করে বাংলাদেশ। মুশফিকুর রহিম ৭৮ ও সাকিব আল হাসান খেলেন ৭৫ রানের দারুণ ইনিংস।

জবাবে অধিনায়ক ফ্যাফ ডু প্লেসিস ৬২ রান করলেও অন্যরা সেভাবে দাঁড়াতে পারেননি। ফলে নির্ধারিত ওভারে স্কোরবোর্ডে ৮ উইকেটে ৩০৯ রান তুলতে সক্ষম হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ব্যাটে-বলে অনন্য নৈপুণ্য প্রদর্শন করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হন সাকিব আল হাসান। মাত্র ২১ রানে হারলেও এ ম্যাচে শুরু থেকেই বেশ কিছু জায়গায় বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। আমাদের আয়োজন সেসব নিয়েই।

বাংলাদেশের উড়ন্ত সূচনা
সৌম্য ও তামিম ভালো সূচনা করেছেন। উদ্বোধনী জুটিতে ৫০ বলে ৬০ রান তোলেন তারা। এর পর অবশ্য দ্রুতই ফেরত যান এ দুজন। তামিম করেন ২৯ বলে ১৬ রান। তবে অন্য প্রান্তে দৃষ্টিনন্দন সব শট খেলে ৩০ বলে ৯ চারে ৪২ রান করেন সৌম্য। মূলত তার ব্যাটিংই দলকে আত্মবিশ্বাস এনে দেয় বড় স্কোরের।

সাকিব-মুশফিক জুটি
৭৫ রানে ২ উইকেট হারানোর পর জুটি বাঁধেন বাংলাদেশের দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মুশফিক ও সাকিব। এ দুজন গড়েন ১৪২ রানের জুটি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩৪তম ফিফটি তুলে নেন মুশফিক। আর ক্যারিয়ারের ৪৩তম অর্ধশতক করেন সাকিব। তাদের সামনে দক্ষিণ আফ্রিকার কোনো পরিকল্পনাই কাজে লাগেনি।

লোয়ার অর্ডারের দৃঢ়তা
সাকিব-মুশফিক দুজনেরই সেঞ্চুরি করার সুযোগ ছিল। তবে অল্প ব্যবধানে এ দুজন আউট হলে খানিকটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে সেই চাপ সামলে নেন আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মোহাম্মদ মিঠুন ও মোসাদ্দেক হোসেন- দুজনেই যথাক্রমে ২১ ও ২৬ রান করে তাকে সমর্থন দেন। এ কারণে শেষ ১০ ওভারে ৮৬ রান তুলতে সমর্থ হয় বাংলাদেশ। এতে করে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে এবং বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ স্কোর করতে সক্ষম হয় মাশরাফির দল।

গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট নেয়া
ছন্দে থাকা ডি কক সতীর্থ ব্যাটসম্যানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রানআউট হন। মার্করামের সঙ্গে ডু প্লেসিসের জুটিটাও জমে উঠেছিল। ফিফটি থেকে ৫ রান দূরে থাকতে মার্করামকে বোল্ড করেন সাকিব। এতে ভাঙে ৫৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন ডু প্লেসিস। ওই সময় ব্যক্তিগত ৬২ রানে তাকে ফেরত পাঠান মিরাজ। এর পর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট তুলে নেন বাংলাদেশের বোলাররা। মোস্তাফিজ ৩, সাইফউদ্দিন ২ ও সাকিব-মিরাজ নেন ১টি করে উইকেট।

দলীয় পারফরম্যান্সে পার্থক্য
বাংলাদেশ এ ম্যাচে পুরো দল হিসেবে খেলেছে। কারও একক পারফরম্যান্সের ওপর নির্ভর করেনি। মুশফিক-সাকিবের ফিফটির সঙ্গে ছিল মাহমুদউল্লাহ ও সৌম্যর অবদান। বোলিংয়ে উইকেট ভাগাভাগি করেছেন চারজন। এদিকটাতেই পিছিয়ে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। দলে দুটি পরিবর্তন এনেও গোটা টিম হিসেবে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হয়েছেন প্রোটিয়ারা। বোলিংয়ে ফিকোয়াও, তাহির ও মরিস ২টি করে উইকেট পেলেও রান আটকাতে পারেননি। তথ্যসূত্র: বিবিসি