দেশ টিভির সাংবাদিক নিখোঁজ: প্রতারকের খপ্পড়ে পরিবার

বিশেষ প্রতিবেদক : দেশ টিভির মানিকগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি এম ওবায়দুর রহমানের নিখোঁজ হওয়াকে পুঁজি করে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার দিকে ওই সাংবাদিক যশোর থেকে নিখোঁজ হন। এদিকে নিখোঁজ সাংবাদিকে পরিবারে পক্ষ থেকে যশোর কতোয়ালী থানায় জিডি করতে গেলে জিডি গ্রহণ করেনি থানা পুলিশ।

বাংলাদেশ কৃষক সমিতির মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মো: লাবিবউদ্দিন আহম্মেদ লাবু ও সাধারণ সম্পাদক মো: নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, খুলনায় বাংলাদেশ কৃষক সমিতির জাতীয় সম্মেলনে যোগ দিয়ে ফেরার পথে যশোর মনিহার সিনেমা হল এলাকার একটি পেট্রোল পাম্প এলাকা থেকে খাদ্য বিরতির সময় থেকে তিনি নিখোঁজ হন। এরপর থেকে তাকে পাওয়া যাচ্ছেনা।
নিখোঁজ সাংবাদিক এম ওবায়দুর রহমানের স্ত্রী সখিনা সুলতানা রানু মঙ্গলবার অভিযোগ করে জানান, তার স্বামীর সন্ধান এখনো পাওয়া যায়নি। তবে চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা এলাকার মো: রেজাউল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি নিজেকে ইত্তেফাক পত্রিকার স্থানীয় সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ওই নিখোঁজ স্বামীর সন্ধান মিলেছে বলে জানিয়ে বিকাশের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

তিনি আরো জানান, দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার ঘিওর উপজেলা প্রতিনিধি শফি আলম তাকে দামুড়হুদার রেজাউল ইসলাম নামের এক সাংবাদিকের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায় নিখোঁজ ওবায়দুর রহমানকে অচেতন অবস্থায় দামুড়হুদার একটি সড়ক থেকে উদ্ধার হয়েছে। শারীরিক অবস্থা নাজুক। তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে রক্ত, অক্সিজেনসহ ঔষধ লাগবে। এরপর তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে দামুড়হুদার ইত্তেফাক পত্রিকার কথিত সাংবাদিক রেজাউলের মোবাইল নম্বর ০১৭৯৪৮৮২৯৮৬ যোগাযোগ করা হলে তিনি ওবায়দুর রহমান উদ্ধারের কথা জানান। পরে ওই রেজাউল ইসলাম তাদের কাছে জরুরী চিকিৎসা সেবা চালানোর জন্য ১০ হাজার টাকা দাবী করেন।

নিখোঁজ ওবায়দুর রহমানের খালাতো ভাই আনিস বিষয়টি নিয়ে ওই রেজাউলের সাথে কথা বললে তাকেও জরুরী ভাবে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে তাৎক্ষনিক ভাবে ১০ হাজার টাকা প্রয়োজন বলে ওই মোবাইল নম্বরে ১০ হাজার টাকা বিকাশ করতে বলেন। পরে টাকা গুলো ওই নম্বরে পাঠানো হয়। এর থেকে রেজাউলের মোবাইল নম্বরটি বন্ধ রয়েছে।

এদিকে কথা হয় ইত্তেফাকের মানিকগঞ্জের ঘিওর প্রতিনিধি শফি আলমের সাথে। তিনি জানান, রেজাউল নামের ওই ব্যক্তি নিজেকে দামুড়হুদা উপজেলার ইত্তেফাক প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে ফোন করে নিখোঁজ সাংবাদিক ওবায়দুর রহমানের উদ্ধারের কথা তাকে অবহিত করেন। কার কাছ থেকে তার মোবাইল নম্বর পেলেন এ সম্পর্কে দামুড়হুদা ওই রেজাউল তাকে( শফি আলমকে) জানান ইত্তেফাক পত্রিকার ডেক্স থেকে সংগ্রহ করেছেন। পরে তিনি নিখোঁজ ওবায়দুরের পরিবারকে বিষয়টি জানান।

এব্যপারে  বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম জানান, নিখোঁজ ওবায়দুরের পরিবার প্রতারনার শিকার হয়েছে। দামুড়হুদার এক প্রতারক ভুয়া খবর দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

নিখোঁজের খালাতো ভাই আনিস জানান, তিনি যশোরে জিডি করতে গেলে সেখানকার পুলিশ জিডি গ্রহন করেননি। থানা থেকে তাকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে স্থান থেকে নিখোঁজ ব্যক্তি গাড়ীতে উঠেছিলেন সেখানে জিডি করতে হবে। তার ভাই এখনো নিখোঁজ রয়েছে বলে তিনি জানান।

সব খবর/ মানিকগঞ্জ/ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/ লিটন