দেশকে চিরস্থায়ী বিভাজনের দিকে ঠেলে দিয়েছে সরকার: বিএনপি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ক্ষমতাসীন সরকারপ্রধানের সমালোচনা করে বলেছেন, গণতন্ত্রের শাশ্বত বাণী মত-পথ ও আদর্শের ভিন্নতার মধ্যে ঐক্যের মিলিত সুরকে প্রধানমন্ত্রী হিংসা-প্রতিহিংসার ছোবলে ক্ষত-বিক্ষত করেছেন। দেশকে চিরস্থায়ী বিভেদ বিভাজনের সর্বনাশা নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। আজ শুক্রবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, গতকাল সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে বিএসএমএমইউতে বোমা উদ্ধারের ঘটনায় সেখানে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক চারবারের প্রধানমন্ত্রীর জীবন ও নিরাপত্তা নিয়ে দলের পক্ষ থেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। আজকে আবারো বোমা উদ্ধারের ওই রহস্যজনক ঘটনার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সার্বিক নিরাপত্তা ও সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জোর দাবি জানাচ্ছি। এই মুহূর্তে তার মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।

রিজভী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ফিনল্যান্ডের হেলসিংকীতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় কমিটির সংবর্ধনায় বলেছেন- ‘বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট বিদেশে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, এগুলো স্থানীয় আওয়ামী নেতাকর্মীদের উপযুক্ত জবাব দেয়ার জন্য তিনি বলেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, যে দেশে মধ্য রাতে নির্বাচন হয়, তার আগে ২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচন ও ১৫৩টি আসনে ক্ষমতাসীনরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয় তাহলে কি তাতে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়? এধরণের অপকর্মকে কীভাবে আপনি দেশ-বিদেশের মানুষের চোখ থেকে আড়াল করতে পারবেন? দেশ-বিদেশের সবাই জানে ক্ষমতায় মোহবিষ্ট প্রধানমন্ত্রী কীভাবে বাংলাদেশের সুষ্ঠু নির্বাচনকে নিরুদ্দেশ করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন। দেশকে বিভাজনের দিকে ঠেলে দিয়েছেন। এর একটি ভয়ংকর উদাহরণ প্রধানমন্ত্রী আপনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়ার কারণে দেশের সর্বাধিক জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ চার বারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বন্দি করেছেন, তাকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত করে দেশব্যাপী গুম-খুন-ক্রসফায়ারের মতো মনুষ্যত্বহীন প্রাণবিনাশী কর্মকাণ্ডের সংস্কৃতি চালু করে মানবতার খোলা বাতাস বন্ধ করে দিয়েছেন। এরপরও কি এগুলোকে আপনি অপপ্রচার বলেবেন?

তিনি আরও বলেন, ঈদের রাতে ভেঙ্গে ফেলা হলো পুরান ঢাকার ‘জাহাজ বাড়ি’। স্থানীয় এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতা হাজী সেলিমের লোকজন দিয়ে দিনরাতে হঠাৎ চকবাজারের এই ভবন ভেঙ্গে ফেলে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। এই বাড়িটি একটি হেরিটেজ, শতবর্ষী এই ঐতিহ্যবাহী ভবনটি প্রত্নতাত্তিক নিদর্শন। হাইকোর্টেরও নিষেধাজ্ঞা ছিল তারপরেও আওয়ামী দখলদারিত্বের হাত থেকে এই ঐতিহ্যবাহী বাড়িটি রেহাই পেল না। এই ঘটনায় আবারো প্রমাণিত হলো, আওয়ামী লীগ মূলত এখন ‘দখল লীগে’ পরিণত হয়েছে।

রিজভী বলেন, ঈদের ঘরমুখী মানুষের ভোগান্তির শেষ ছিল না। এর ওপর দুর্ঘটনাও হয়েছে অনেক। সড়কমন্ত্রীর সস্তিদায়ক ঈদ যাত্রার ঘোষণা যে সম্পূর্ণ বাকোয়াস ছিল সেটিরই প্রমাণ মিলেছে। ঈদের দিন দেশের বিভিন্ন জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ২১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ঈদের পরের দিনেও জামালপুর, মাদারপুরে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ জনগণের সামনে বরাবরই মিথ্যা অঙ্গীকার করেছে।