ত্বকের ভাষা বুঝেই চিকিৎসা

ডা. রুবাইয়া আলি: জন্মের পর থেকেই নবজাতককে নিয়ে শুরু হয়ে যায় নানা চিন্তা। সবাই জানতে চায়, নবজাতক শিশুটি ফর্সা না শ্যামবরণ। আমরা ত্বকের বাহ্যিক সৌন্দর্য নিয়ে বেশ গোড়া থেকেই ভাবতে শুরু করি। এভাবে আমার আমিকে ধরে রাখে যে ত্বক, তার পরিচর্যাও চলছে সেই আদিম যুগ হতে। নিম, মুলতানি মাটি, দুধের সর ইত্যাদি দিয়ে। এখন ব্যস্ত জীবনে কাজের ফাঁকে কেউ কেউ প্রসাধনী দিয়ে সেরে ফেলছেন সেই কাজ।এখন বুঝতে হবে ত্বকের ভাষা।

শুষ্ক, তৈলাক্ত, মিশ্র একেক ত্বকের যত্ন হবে একেক রকম। নিয়মিতভাবে এই যত্ন নেয়াটাই শুনতে সহজ মনে হলেও আলসেমি বা ব্যস্ততায় হয়ে ওঠে না ঠিক তখনই সহজ সমাধানের অভাবে ত্বকে বাসাবাঁধে রোগ, ম্লান হয়ে যায়, পরে যায় বয়সের ছাপ। তাই শুভস্য শীঘ্রম।

প্রতিদিন অন্তত দু’বার নিজের ত্বকের ধরন অনুযায়ী একটা ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ খুব ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। ধুলাবালি,ঘাম এইসব থেকে ছোটখাটো সমস্যা ধীরে ধীরে বেড়ে উঠে। তারপর একটি ভালো ময়েশ্চারাইজার দিয়ে রাখতে হবে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে। যাদের তৈলাক্ত ত্বকে তারা ভাবেন তেলতেলে ভাব বেশি হবে তাই ময়েশ্চারাইজার দরকার নেই। কিন্তু মুখ ধোবার পরে তেলগ্রন্থি থেকে তেল নিঃসৃত হয় শুষ্কতা দূর করার জন্য। তাই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করলে

ভারসাম্য ঠিক থাকে ও ত্বক স্নিগ্ধ এবং সতেজ থাকে।
সকালে একটা সানব্লক ব্যবহার করতেই হবে তা ত্বকের ধরন যাই হোক। এটা ত্বকের যত্নের আইন হিসেবে আমি উল্লেখ করতে চাই। রোজ সূর্য রশ্মি আমাদের ত্বক তিল তিল করে নষ্ট করে দেয়।এবার আসা যাক চুলের যত্নের চুলছেঁড়া বিশ্লেষণে।

চুল পরে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না কারণ এটাই স্বাভাবিক। চুল প্রতিদিন ঝরতেই পারে।মাত্রাতিরিক্ত হলে বিশেষজ্ঞ মতামত নিতে হবে। তবে যত্নের ব্যাপারটা হল তেল যদি দিতে চান মাথার তালুতে নয় দিবেন চুলে।

শ্যাম্পু সপ্তাহে ৩ দিন করলে যথেষ্ট তবে খুশকি বা শুষ্ক তালু বা স্ক্যাল্প যাদের তারা মেডিকেটেড শ্যাম্পু বিশেষজ্ঞ মতামত নিয়ে ব্যবহার করলেই মুক্তি পেতে পারেন সহজে।এখন মেকাপ নিয়ে কিছু কথা।

একটি প্রচলিত ধারণা আছে, এতে ত্বকের সমস্যা হতে পারে,আসলে তা নয়।যদি ভালো ব্রাণ্ডের প্রসাধনী ব্যবহার করা হয় ও তারপর ভালোভাবে মেকাপ ভালোমত ধুয়ে ফেলা হয় রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে তাহলে কোনো সমস্যা পোহাতে হয় না। সর্বোপরি ত্বকের যত্নে নিয়মিত হোন,সহজে সুস্বাস্থ্য উপভোগ করুন।

লেখক: ডা. রুবাইয়া আলি, কনসালট্যান্ট, ডার্মাটোলজি অ্যান্ড ভেনেরোলজি বিভাগ, অ্যাপোলো হাসপাতাল, ঢাকা