জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মীর সংকটের সমাধান জরুরি: ডাঃ জাফরুল্লাহ

জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গণভোট অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাশ্মীর সংকটের সমাধান জরুরি। দেশবাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’র উদ্যোগে ১৮ ফেব্রুয়ারি সকালে অনুষ্ঠিত ‘কাশ্মীর ও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি’শীর্ষক একটি আলোচনা সভায় বক্তারা এমন মন্তব্য করেন।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এর প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী, আলোচনায় অতিথি বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখনে সাবেক বাংলাদেশী কূটনীতিক সাকিব আলী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্যারিস্টার মেজর (অবঃ) সরোয়ার, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল খায়ের, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু। সঞ্চালনা করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে. এম রকিবুল ইসলাম রিপন।

সভায় কাশ্মীর সংকট দক্ষিণ এশিয়া তথা সারাবিশ্বের জন্য হুমকি স্বরূপ বলে মন্তব্য করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডাঃ জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, কাশ্মীরিদের যে বিশেষ স্বায়ত্বশাসন (আর্টিকেল ৩৭০) তা রদ করে ভারত এই অঞ্চলকে আরো অস্থিতিশীল করে তুলেছে। ভারত সরকারকে সাম্প্রদায়িকতার বিষ বাম্প ছেড়ে কাশ্মীরের জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।

বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষীকিতে কাশ্মীরি জনগণের প্রতি বঙ্গবন্ধুর যে সমর্থন তা পুনরায় মনে করিয়ে দিয়ে ডাঃ জাফরুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের উচিৎ কাশ্মীরিদের পাশে দাঁড়ানো।
জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে গণভোট অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা রক্ষায় কাশ্মীর সংকটের সমাধান করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, আমলারা আজ দেশ নিয়ন্ত্রণ করছে। এতদিন সরকার করোনা দিয়ে মানুষকে আটকে রেখেছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের মাধ্যমে মানুষকে বন্দী করে রেখেছে, এ কারণে মানুষ এখন যা বলতে চায় তা বলতে পারছে না।

সাবেক বাংলাদেশী কূটনীতিক সাকিব আলী বলেন, কাশ্মীর ভারত ও পাকিস্তানের উভয়ের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৮৯ সাল থেকে এখানে সশস্ত্র সংগ্রাম চলছে। এখানে অধিকাংশ মুসলিম এবং তারা নিয়মিত নির্যাতিত হচ্ছে। এই নির্যাতনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশসহ সকল রাষ্ট্রের জনগণের সোচ্চার হওয়া উচিত। এক্ষেত্রে সার্ককে কার্যকরী করতে হবেন।

নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্যারিস্টার মেজর (অবঃ) সরোয়ার বলেন, ভারতকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গণতন্ত্র চর্চা করতে হবে। তিনি কাশ্মীরিদের ন্যায্য অধিকারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেন, আর্টিকেল ৩৭০ পুনঃপ্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ভারতকে কাশ্মীরি জনগণের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠীর পাশে দেশের সরকার এবং রাজনৈতিকদলসমূহকে সহায়তা করার আহ্বানও জানান তিনি। জাতিসংঘের মাধ্যমে গণভোট আয়োজনের মধ্যদিয়ে কাশ্মীরীদের মতামত অনুযায়ী সিদ্ধান্তগ্রহণ করা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।
তিনি বলেন, কাশ্মির সমস্যা বুঝতে হলে বিজেপির ইতিহাস বুঝতে হবে। বিজেপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে মুসলমানদের শোষণ করতে। তারা কাশ্মীর তথা ভারতের মুসলমানদের নির্যাতন করছে, সাথে শোষণ করছে বাংলাদেশকেও। তাই এখনই প্রয়োজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভারতের আগ্রাসন নীতিকে প্রতিহত করা।

বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল খায়ের বলেন, দক্ষিণ এশিয়ায় সার্ক কেন অকার্যকর হলো- জাতিকে সেটা খুঁজে বের করতে হবে। কারণ, এটাই উরোপীয় ইউনিয়নের মত এই অঞ্চলের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক উন্নয়নে সর্বোচ্চ ভূমিকা পালন করতে পারত। কাশ্মীরের স্বাধীনতাকামী জনগোষ্ঠীর পাশে দেশের সরকার এবং রাজনৈতিক দলসমূহকে সহায়তা করার আহ্বান জানান তিনি।

ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার সার্বিক পারস্পরিক সহযোগিতা নিয়ে জিয়াউর রহমান গঠন করেন সার্ক। কিন্তু আজ তা অকার্যকর। দেশের স্বার্থেই সার্ককে কার্যকর সংস্থায় পরিণত করতে হবে।