জরিমানা করলে মানুষের টনক নড়ে : মেয়র আতিক

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, জনগণ যদি সম্পৃক্ত হয় মশার উপদ্রব কমানো সম্ভব। পূর্বে এডিসের লার্ভা পাওয়া ভবনে পুনরায় অভিযানে এসে দেখলাম জরিমানা করায় মানুষ সচেতন হয়েছে। আসলে জরিমানা করলে মানুষের টনক নড়ে।

তিনি বলেন, গত ৮ জুলাই জাপান গার্ডেন সিটিতে অভিযানে এসে সব ভবনের বেজমেন্টে প্রচুর লার্ভা পেয়েছি। লার্ভা পাওয়ায় পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল। আমি জাপান গার্ডেনকে লার্ভা গার্ডেন বলেছিলাম। প্রতিটি বেজমেন্টে লার্ভা ছিল। কিন্তু আজকে এসে দেখলাম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। এখন জাপান গার্ডেন সিটি হয়েছে রোজ গার্ডেন সিটি।

বুধবার (১৬ আগস্ট) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জাপান গার্ডেন সিটির যেসব ভবনে লার্ভা পাওয়া গিয়েছিল সেগুলোতে পুনরায় অভিযানে এসে তিনি এসব কথা বলেন।

ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কমেছে। মহাখালী ডিএনসিসি হাসপাতালের অধিকাংশই ঢাকার বাইরের রোগী। অর্থাৎ মানুষ সচেতন হয়েছে কারণ তারা জরিমানা দিয়েছে। আমরা সচেতনতা বাড়াতে প্রচারণাও চালাচ্ছি। গত দেড় মাসে যেখানে অভিযান চালানো হয়েছে সেখানে আবারও রিভার্স অভিযান চলবে। দেড় মাসে প্রায় দেড়কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পুরোটাই রাজস্ব বিভাগে জমা হয়েছে। যদি এই টাকাটা সিটি কর্পোরেশন পেত তবে এই টাকা মশক নিধনে ও জনসচেতনতায় ব্যয় করা যেত।

এ সময় ডিএনসিসি মেয়র জাপান গার্ডেন সিটির মেইনটেইন্যান্সের দায়িত্ব যারা আছেন তাদেরকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, লার্ভা পেলে আমরা যেমন কঠোর হয়ে জরিমানা করেছিলাম, আবার পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ পাওয়ায় ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানালাম। আমরা আসলে জরিমানা করতে চাই না। আমরা চাই কোথাও যেন লার্ভা পাওয়া না যায়।

বিটিআই সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, বিটিআই আমদানির বিষয়ে প্ল্যান্ট প্রটেকশন উইংকে আমরা চিঠি দিয়েছি। তারা জানিয়েছে বিটিআই আমদানি করা যাবে। ফলে পিপিআর অনুযায়ী টেন্ডারে সবচেয়ে কম দরদাতা কোম্পানিকে কাজটি দেওয়া হয়েছে।

মেয়র বলেন, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মার্শাল এগ্রোভেট যেহেতু দাবি করেছে তারা সিঙ্গাপুরের বেস্ট ক্যামিকেলস থেকে এনেছে এজন্য তাদের কাছে প্রমাণসহ তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে ডিএনসিসির পক্ষ থেকে। চিঠিতে জানতে চাওয়া হয়েছে তারা কোন কোম্পানি থেকে এনেছে, কার মাধ্যমে এনেছে। আর মাত্র পাঁচ টন বিটিআই আনা হয়েছে পরীক্ষামূলকভাবে। চাইলে বিটিআই সংগ্রহ করে যে কেউ পরীক্ষা করে দেখতে পারবেন এটা কার্যকরী বিটিআই কিনা। মার্শালের বিরুদ্ধে অন্যায়ের প্রমাণ পাওয়া গেলে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযান শেষে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ডিএনসিসি নগর ভবনে বিটিআই টেস্ট করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কীটতত্ত্ববিদ ড. কবিরুল বাশার। তিনি বলেন, এখন যে টেস্ট করা হলো ছয় ঘণ্টার মধ্যে এটির রেজাল্ট পাওয়া যাবে। এর আগে জাহাঙ্গীর নগরের ল্যাবের টেস্টে শতভাগ কার্যকরী রেজাল্ট পাওয়া গেছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম শফিকুর রহমান, উপ-প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা লে. কর্নেল মো. গোলাম মোস্তফা সারওয়ার, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. ইমদাদুল হক প্রমুখ।