ঢাকা অফিস : সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. সা’দত হুসাইনের আর নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রজিউন)। আজ রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
ড. সা’দত হুসাইনের ছেলে শাহজেদ সা’দত গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন কিডনির জটিলতাসহ নানা সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। তিনি বলেন, “বাবা ইউনাইটেড হাসপাতালে আইসিইউতে ছিলেন। কিডনি জটিলতা, ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিসে আক্রান্ত ছিলেন। চিকিৎসকরা রাত ১০ টা ৪৯ মিনিটে তার মৃত্যু ঘোষণা করেন।”
করোনাভাইরাস সঙ্কটের এই সময়ে বৃহস্পতিবার ঢাকায় লাশ দাফনের প্রস্তুতি নিয়েছে তার পরিবার। শাহজেদ বলেন, “আমি, দুই বোন, মা-খালা পারিবারিকভাবে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব।”
এর আগে হাসপাতালের যোগাযোগ ও ব্যবসা উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ডা. সাগুফতা আনোয়ার গণমাধ্যমকে তাঁর অবস্থা সঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছিলেন।
ড. সা’দত হুসাইন জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলেও তিনি করোনায় আক্রান্ত হননি বলে জানান তিনি। ডা. সাগুফতা আনোয়ার বলেন, তার রক্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে এটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, করোনা নয়। করোনা পরীক্ষাও করা হয়েছিল, কিন্তু নেগেটিভ এসেছে।
পিএসসির নবম চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৭৩ বছর বয়সী ড. সা’দত হুসাইন গত ১৩ এপ্রিল থেকে অচেতন অবস্থায় ছিলেন বলেও জানান তিনি। ১৩ এপ্রিল দুপুরে বাসায় হঠাৎ অসুস্থ বোধ করেন সা’দত হুসাইন। পরে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি আগে থেকেই কিডনি, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসে ভুগছেন বলে জানান চিকিৎসকরা।
উল্লেখ্য, ২০০২-২০০৫ সালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ছিলেন সা’দত হুসাইন। এরপর ২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত পিএসসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
সা’দত হুসাইন ১৯৪৬ সালের ২৪ নভেম্বর নোয়াখালীতে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি পড়াশোনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে। ১৯৮৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি ডিগ্রি নেন।
পাকিস্তান আমলে ১৯৭০ সালে সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তানে (সিএসপি) যোগ দেন সা’দত। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ভারতে গিয়ে প্রবাসী সরকারের দায়িত্ব পালন করেন, তা তিনি লিখে গেছেন ‘মুক্তিযুদ্ধের দিন-দিনান্ত’ বইয়ে। ২০০৫ সালে সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার আগে তিনি কর্মজীবনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ নানা দায়িত্ব পালন করেন।
চট্টলানিউজ/এসআর