ঢাকা অফিস : মাদক উদ্ধারের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার আসামিকে গ্রেফতারের আগে তার সঙ্গে ফোনালাপের ঘটনায় দারুস সালাম থানার (বর্তমানে উত্তরা পশ্চিম থানায় কর্মরত) তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ রায়হানুজ্জামানের বিষয়ে তদন্ত করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারকে আগামী ১ মাসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি মামলার আসামি সোহাগকে ৩ মাসের জামিন দেয়া হয়েছে।
আদালতে হাজির হয়ে ওই এসআইয়ের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার পর বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আসামির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান রানা। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।
২০১৮ সালের ৯ জুন সোহাগ নামে এক বাস ম্যানেজারের বিরুদ্ধে হেরোইন এবং ২১ পিস ইয়াবা উদ্ধারের মামলা দেয়া হয়। কিন্তু আদালতে উপস্থাপন করা নথিতে দেখা যায়, সোহাগের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পূর্বে এসআই মোহাম্মদ রায়হানুজ্জামান তাকে ডেকে এনেছিল। ওই মামলায় জামিনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করে সোহাগ।
তার জামিন আবেদনের শুনানিতে হাইকোর্টে এ সংক্রান্ত একটি কল লিস্ট দাখিল করা হয়। সেই কল লিস্ট পর্যালোচনা করে আদালতের কাছে প্রতীয়মান হয় যে, ওই এসআই আসামিকে ফোন করে ডেকে আনেন এবং তাকে গ্রেফতার করার পূর্বে তার সঙ্গে ফোনালাপ করেন। অথচ আসামিকে গ্রেফতারের আগে পুলিশের এমন ফোনালাপের আইনগত সুযোগ নেই। এ ঘটনার বিষয়ে সশরীরে ব্যাখা দিতে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব করেন আদালত।
তারই ধারাবাহিকতায় মোহাম্মদ রায়হানুজ্জামান বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) আদালতে হাজির হয়ে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন এবং নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
রায়হানুজ্জামান তার ব্যাখ্যায় হাইকোর্টকে বলেছেন, আসামি সোহাগ তার সোর্স হিসেবে কাজ করত। সোহাগ তাকে বিভিন্ন জায়গার মাদকের তথ্য দিতেন। কিন্তু সোহাগের সঙ্গে মাদক বিষয়ে তথ্য দেয়া নিয়ে বিবাদ সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে সোহাগকে মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়।
এছাড়াও রায়হানুজ্জামান নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়ে হাইকোর্টকে বলেন, আসামির সঙ্গে তার ফোনালাপ হয়েছিল এটি সত্য। বিভিন্ন তথ্য নেয়ার জন্য তাকে ফোন করা হয়েছিল। তবে এমন ফোনালাপ উচিৎ হয়নি মর্মে তিনি আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
চট্টলানিউজ/এসএ